রেদওয়ানুল হক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৮ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। বুধবার (১৭ এপ্রিল) ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেসিক ব্যাংকের একজন পরিচালক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সভায় উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, একীভূত হওয়ার বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের পরিচালকরা একমত হয়েছেন। তবে সেটি অবশ্যই কোন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে হতে হবে। সিটি কিংবা যে কোন বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক বেসরকারি হয়ে যাচ্ছে এমন খবর প্রচার হওয়ার প্রেক্ষাপটে বড় ধরণের সংকট তৈরি হতে পারেÑ এ বিষয়টি সরকারকে জানানো হবে।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে বড় আমানতকারীরা তাদের আমানত উত্তোলনের জন্য চাপ দিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কর্পোরেশন থেকেও চিঠি দেওয়া হচ্ছে। ফলে যেকোন সময় বড় ধরণের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ নিয়ে ব্যাংকের কর্মীরা উদ্বিগ্ন। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না করার অনুরোধ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারণেই বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পর্ষদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসিক ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু মো. মোফাজ্জল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিভিন্ন কর্পোরেট ডিপোজিটররা তাদের আমানত উত্তোলনের জন্য চাপ দিচ্ছে। ব্যাংক একটা কঠিন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টি সরকারকে জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু বেসিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, তাই ব্যাংকটির যেকোন ক্ষতি রাষ্ট্রের ক্ষতির সামিল। তাই উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন আকারে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসিক ব্যাংকের বোর্ড।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিনের বৈঠক হয়। সেখানে বেসিক ব্যাংককে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত জানান গভর্নর। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি কোনো পক্ষ।
গত মঙ্গলবার বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি ব্যাংকের পরিবর্তে সরকারি যেকোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার দাবি জানান। এ জন্য ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিডিবিএল ও রাকাব অন্য দুটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) হতে চলেছে, সেখানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে কেন বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের আলোচনা চলছে? এ প্রক্রিয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মারকলিপিতে বৈষম্যমূলক নীতি পরিহার করে বিডিবিএল ও রাকাবের মার্জারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেসিক ব্যাংককে অন্য একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে মার্জারের আবেদন জানানো হয়।