প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:১৬ পিএম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৪২ পিএম
পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে মঙ্গল সমাবেশে দর্শকদের সাহিত্যচর্চার গল্প শোনান কবি শামীম আজাদ। ছবি : প্রবা
কবিতায় তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন গ্রাম বাংলার শাশ্বত রূপ। আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নারীর ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতার কথা তুলে ধরেন সরল পঙক্তিতে। কালেভদ্রে লিখতেন গদ্য। ছোটগল্পে প্রকৃতি ও নারীর সঙ্গে তিনি যে সংযোগ স্থাপন করেছেন তাতে মুগ্ধ হন পাঠক। সত্তর ও আশির দশকে ঢাকায় শিল্প-সাহিত্য-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
বলছিলাম কবি শামীম আজাদের কথা। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে মঙ্গল সমাবেশে দর্শকদের সাহিত্যচর্চার গল্প শোনান তিনি। কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান ও মোজাফফর হোসেনের সঞ্চালনায় শামীম আজাদের গল্প, কবিতা ও সাহিত্য ভাবনার কথা শুনে মুগ্ধ হন দর্শক-পাঠক।
শামীম আজাদ বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধই আমাকে কবি বানিয়েছে। কবিতায় এমন কী যেন আছে, কবিতা ইচ্ছে করলে বড় করতে পারি। আমি কবিতায় ডুবে গেলাম। একদিন কবি রফিক আজাদ এসে বললেন, তোমার গদ্য লিরিক্যাল, তোমার কবিতায় আরও নারী চাই। তারপর আরও কবিতা লিখতে শুরু করি।’
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ’মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কীভাবে যেন হারিয়ে যাচ্ছে। যেখানে শুধুমাত্র রাজাকারের তালিকা করার কথা, সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। স্বাধীনতার এত বছর পর এখনও স্বাধীনতার কথা বলতে হয় কেন?’
সাংবাদিক, কবি পরিচয়ের বাইরে শামীম আজাদ অধ্যাপনা করতেন ঢাকা কলেজে। শিক্ষকতা ছেড়ে কেন বিদেশ পাড়ি জমিয়েছিলেন, সেই কথাও তিনি শুনিয়েছেন। বললেন, সে সময়ে ঢাকা কলেজে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিলে শিক্ষকতা ছেড়ে দিই। চলে যাই বিদেশে।
দীর্ঘদিন লন্ডনে বসবাস করছেন শামীম আজাদ। বিদেশ বিভুঁইয়ে প্রথম ভাগে সাহিত্যচর্চা করতে গিয়ে বেগ পোহাতে হয়েছে তাকে। সেই স্মৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে গিয়ে প্রথমে নিজের লেখার চর্চা করতে পারিনি। তারপর আবার নিজেকে খুঁজতে শুরু করলাম। তবে নিজের লেখার মাধ্যমেই বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়েছি আমি। সেখানে আমার প্রথম কবিতা ছাপা হয় নিউ ইয়র্ক টাইমসে। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নিজের গল্পগুলো সবাইকে শুনিয়েছি। আমার লেখা, আর আমার সঙ্গে বাংলাদেশকেও শুনছে সবাই।
গল্প কথন নিয়ে শামীম আজাদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা গেছে, স্টোরি টেলিং এক ধরনের বাণিজ্য। আসলে এটা একটা শিল্প। আমি ভাবতাম শিক্ষক হিসেবে আমার শক্তি কী? দেখলাম আমি সুন্দর করে গল্প বলতে পারি বাচ্চাদের।
কবি কামাল চৌধুরী, অভিনেতা ও বাচিকশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ময় মোজাফফর প্রমুখ রাজধানীর কাঁটাবনের এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ।