বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:২৯ পিএম
ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ। প্রবা ফটো
বাহাদুর শাহ পার্ক রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব, এটাকে ধ্বংস করা সরকারের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পুরান ঢাকায় বাহাদুর শাহ পার্কে ‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, এই পার্ক একটি ঐতিহাসিক স্থান। সিটি করপোরেশন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান করে পার্ককে ধ্বংসের মধ্যে ফেলে দিতে পারে না। এখানে মানুষ এসে বসবে, শিক্ষার্থীরা এসে হাসবে-খেলবে, মানুষ সতেজ বাতাস নিবে। সেখানে রেস্টুরেন্ট করে পার্ককে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাহাদুর শাহ পার্ক বাঙালির প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এটা বাঙালির ঐতিহ্য। এই পার্ক সিটি করপোরেশনের আওতায় থাকা উচিৎ নয়। এটি থাকবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে। সিটি করপোরেশনের মেয়র সাহেবের উচিৎ হবে এটাকে স্মৃতিবিজড়িত ও ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে দিয়ে দেওয়া। সরকারের উচিৎ এই পার্ক সংরক্ষণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করা।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বলা হচ্ছে তিন লাখ টাকার বাৎসরিক ইজারায় এখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা করতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা শুনেছি এখানে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এটা যদি সত্য হয়, এখন দোকান করা হয়েছে, কিছুদিন পর এই পার্ককে পুরোপুরি দখলে দিয়ে বাণিজ্য কেন্দ্র করে ফেলা হবে। অনেকটা সুঁচ হয়ে ঢুকে ফালা হয়ে বের হওয়ার মতো ঘটনা।
রমজান মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, এসব বাণিজ্যিক স্থাপনা এই পার্কের মধ্যে রাখা যাবে না। রমজান মাসের মধ্যেই এসব উচ্ছেদ করতে হবে। তা না হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পার্কে মিউজিয়াম স্থাপনের গুরুত্ব উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, পার্কে কেন বাণিজ্যিক স্থাপনা হবে? পার্কের ভিতরে কেন পাবলিক টয়লেট হবে? এখানে একটি মিউজিয়াম করতে হবে। যেখানে এই পার্কের ইতিহাস, স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এসে ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলনে এই পার্কের ঐতিহাসিক সম্পর্ক সম্পর্কে জানবে। সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে।
ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ-এর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একে রিয়াজুদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌম্য সরকার, ড. মহসিন রেজা, শেখ বোরহান উদ্দিন, কলেজের শিক্ষক বীথি সরকার প্রমুখ।