× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘বাজারে গেলেই সব টাকা শেষ’

সোহেল চৌধুরী

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:১৮ পিএম

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১১ পিএম

‘বাজারে গেলেই সব টাকা শেষ’

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাজারদরের সঙ্গে সংসার খরচের সমন্বয় করতে পারছে না তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কথা হয় রশিদ মিয়া নামের একজনের সঙ্গে। অপেক্ষাকৃত কম দামে সংসারের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে এখানে এসেছেন তিনি। কিন্তু বাজার ঘুরে তার কণ্ঠে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। আক্ষেপ করে বললেন, বাজারে গেলেই সব টাকা শেষ। 

রশিদ মিয়ার ভাষায়, ‘বাজারে সব জিনিসপত্রের যে দাম, এই দামে আর কুলাইয়া উঠতে পারি না। টাকা যা কামাই তা বাজার করতে আসলেই শেষ। যত দিন যায়, দাম তত বাড়ে। কমার কোনো লক্ষণ দেখি না। মাছ মাংস কিনি না অনেক দিন হলো। খাই ডিম, তার দামও বাড়তি। খামুটা কী তাহলে?’ একই বাজারে দেখা হলো রহিমা বেগম নামের এক নারীর সঙ্গে। মুরগি কিনতে এসে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন তিনি। কিছুটা কমে কেনার আশায় দর কষাকষি করলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ব্রয়লারের কেজি কিনতে হয়েছে ২২০ টাকা দরে। 

বাজারদর নিয়ে জানতে চাইলে রীতিমতো ক্ষোভ ঝরছিল তার কণ্ঠে। বলেন, ‘এসব দর জেনে বা আমার বিষয়ে জেনে কী করবেন? কোনো লাভ আছে? দাম কি কমে কিছুর? দিন দিন তো দাম বাড়েই। আমি মানুষের বাসায় কাজ করে খাই। যা টাকা পাই তা দিয়ে পোলাপান নিয়ে এত দামের বাজারে কীভাবে চলছি সেটা আমি আর আমার আল্লাহ জানেন। খাই মুরগি, তাও ২০০ টাকার ওপরে দাম।’ 

শ্যামলী নতুন কাঁচাবাজারের কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আলতাফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বেতনটা এক বছর আগে যেমন ছিল এখনও তাই আছে। মাঝখান দিয়ে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম। কোন জিনিসটার দাম না বাড়ল? চাল, ডাল, মাংসের বাড়তি দাম তো আছেই। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও বাড়তি। বাজার করতে এলে এখন অনেক হিসাব করতে হয়। সঞ্চয় বলতে যে একটা কথা আছে, তা এই দুর্মূল্যের বাজারে ভাবারও সুযোগ নেই।’ 

ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)। 

তারা বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারির ২২ তারিখে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে তা বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। সোনালি মুরগি জানুয়ারির ২২ তারিখে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। 

ফার্মের প্রতি হালি লাল ও সাদা ডিম গত মাসের ২২ তারিখে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও চলতি মাসের ২২ তারিখে বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত। 

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩২০ আর দেশি মুরগি ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা। 

সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় বাজারে গত দুই দিনের তুলনায় মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা। একইভাবে ডিমের দামও ডজনে কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি ডজন সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। 

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মাহমুদ লিটন বলেন, ‘ডিমের দাম বুধবার থেকে একটু কমছে। ডজনে ১০ টাকা কমে গেছে। সরবরাহের ওপর দাম নির্ভর করে। এই কয়দিন বাজারে ডিম আসছে কম, তাই দাম বাড়তেছিল। এখন সরবরাহ ভালো। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে দাম আরও কমে আসবে।’ 

এক সপ্তাহের ব্যবধানে রুই, কাতল ও সিলভার কার্পের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বড় রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। মাঝারি আকারেরটা ৩৫০ থেকে ৪০০। বড় সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর ছোট আকারেরগুলো ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। 

বড় সাইজের কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকায়। ছোট আকারেরগুলোর ২৭০ থেকে ৩০০ টাকায়। মানভেদে তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৬০, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০, শিং ৫০০ থেকে ৫৫০, পাঙ্গাশ ১৬০ থেকে ১৮০, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৭০০, কৈ ২৫০, ইলিশ আকারভেদে ৯০০ থেকে ১২শ’, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আল আমিন মিয়া বলেন, ‘মাছের দাম আগের মতোই আছে। তবে রুই আর সিলভার কার্পের দামটা একটু বাড়তি। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়ছে। আবার কালকের বাজারেই কমে যাবে। রুই, কাতল, সিলভার কার্পের দাম সারা বছর একই থাকে।’ 

শীত মৌসুম শেষ হয়ে আসায় সরবরাহে কিছুটা ভাটা পড়ায় মানভেদে কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সবজির দাম। প্রতি কেজি শিম ৫০, টমেটো ২৫, বেগুন ৬০, আলু ৩০, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০, শসা ৩০, চিচিঙ্গা ৫০, মিষ্টি কুমড়া ৫০, করলা ১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা দরে। আর কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা