প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১২:০৪ পিএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪২ পিএম
‘মুক্তির উৎসব’ এ দেশ গড়তে হাজারো শিক্ষার্থীকে শপথ পড়ান অতিথিরা। প্রবা ফটো
হাজার বছরের পথ পেরিয়ে, বহু লড়াই-সংগ্রাম করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র পেয়েছে, সেই দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাতা হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার শপথ নিয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়া হাজারো শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের শিক্ষা কর্মসূচির অধীনে ২১তম ‘মুক্তির উৎসব’ এর আয়োজনে শিক্ষার্থীরা দেশ গড়ার এ শপথ নেয়।
ছায়ানটের শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠ করান বীর প্রতীক মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি সারা যাকের ও সংগীতশিল্পী ডালিয়া নওশীন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূর ও মফিদুল হক।
শিক্ষার্থীরা একযোগে শপথ নেয়, বঙ্গবন্ধুর মহিমান্বিত নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র। এই দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাতা হিসেবে আমরা তাই অঙ্গীকার করি, সবার জন্য সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে যোগ্য ভূমিকা পালন করবো। আমরা একুশ শতকের বাংলাদেশের নবীনদল, মুক্তির উৎসবে মিলিত হয়ে শপথ গ্রহণ করছি, মুক্ত-স্বাধীন স্বদেশের জন্য যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাদের আমরা কখনো ভুলবো না। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে জানবো ও আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহমান রাখতে সদা কাজ করবো। যে উদার অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ গড়ার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন বীর শহীদেরা তা বাস্তব করে তুলতে কাজ করব। সবার জীবন বিকাশের জন্য হাত বাড়াবো পিছিয়ে পড়া মানুষদের দিকে। বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিসত্তার মানুষ, নারী ও পুরুষ, অগ্রসর ও অনগ্রসর সবাই মিলে গড়বো উন্নত স্বদেশ, যা পৃথিবীর বুকে আসন নেবে মর্যাদার। সবাই মিলে দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করব।
আ ক কম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি, সে চেতনার ভিত্তিতে এ দেশটি হবে গণতান্ত্রিক দেশ। এ দেশে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। এ দেশ হবে অসাম্প্রদায়িক। যেখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন তোমরাই হবে এর কারিগর।’
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ‘দেশে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। পাশাপাশি ধর্মবিদ্বেষ ও লোভের বিস্তারের কারণে সমাজ অবক্ষয়ের খাদের কিনারায় পৌঁছে গেছে। ফলে সমাজে ধর্ম, বিত্তভেদে বিভক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। লিঙ্গভেদে সুস্থ সম্পর্ক নষ্ট মানসিকতার কবলে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে সমাজে সম্প্রীতির পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, ‘‘এ বছরের উৎবের শ্লোগান হচ্ছে ‘আমরা গড়বো সম্প্রীতির বাংলাদেশ।’ আমাদের প্রত্যাশা তোমার যে প্রতিবেশী ও সহপাঠী রয়েছে তাকে লিঙ্গ, ধর্ম, জাতি, বিত্ত নির্বিশেষে প্রতিজনকে সমান মর্যাদায় দেখবে। কেউ এ কারণে উপহাস বা অমর্যাদা করলে বা কোনো অনাচার করলে রুখে দাঁড়াবে। এই বৈষম্য ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধেই আমরা স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছি। তাই তোমাদের এই অঙ্গীকারের মধ্য দিয়েই সমাজ জেগে উঠবে। এতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সম্প্রীতির রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে উঠবে।’’
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, আবিদা রহমান সেতু, সন্দীপন। রিয়াদ হাসান৷ শুক্লা সরকারের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে ধ্রুপদ কলাকেন্দ্র।