সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৩ ২২:২৬ পিএম
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৩ ২২:৫৯ পিএম
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের একটি ভবনে বিস্ফোরণে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রবা ফটো
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে
বিস্ফোরণ ঘটা ভবনের বেজমেন্টে মাছি উড়ছিল। সেটি দেখে ডাকা হয় র্যাবের ডগ স্কোয়াডকে। ডগ স্কোয়াডের সদস্যদের একটি জায়গায় বারবার হাঁটাহাঁটি দেখে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত হয়, বেসমেন্টের এই নির্ধারিত স্থানে চাপা পড়ে
আছেন কেউ। এরপর সেখানে একটা একটা করে ইট,
বিল্ডিংয়ের
ভাঙ্গা অংশ সরিয়ে বুধবার (৮ মার্চ) বিকেলে একে একে
দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সবশেষ উদ্ধার দুজন হলেন সুমন ও রবিন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘রাজউক, সেনাবাহিনীসহ
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছিলেন। এরপরও আমরা
সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে একদম ম্যানুয়ালি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।’
তিনি বলেন, ‘অভিযানকালে আমরা দেখেছি
ভেতরে অনেক মাছি। তখন আমরা র্যাবের ডগ স্কোয়াডকে সেখানে ডাকি। র্যাবের ডগ
স্কোয়াড সেখানে বারবার হাঁটাহাঁটি করে। তখন আমরা নিশ্চিত হই ওখানেই মরদেহ থাকতে
পারে। তখন আমরা একটি একটি করে ইট সরিয়ে সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি মরদেহ দুটি উদ্ধার
করতে সক্ষম হই।’
মরদেহ উদ্ধার সম্পর্কে আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘ভবনটির একদম
বেজমেন্টে অনেক ইট চাপা অবস্থায় মরদেহ দুটি পড়েছিল।’
আরও কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কিনা এবং তাদের উদ্ধার সম্পর্কে
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি
তিনজন নিখোঁজ। এর মধ্যে আপনারা দেখতে পেলেন যে আমরা দুজনের মরদেহ
উদ্ধার করেছি। এখন আমরা মালিক সমিতি ভবন মালিক দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলব। ক্রস চেক করব, আরও কেউ নিখোঁজ রয়েছে কি না। থাকলে উদ্ধারের চেষ্টা
করা হবে।’
পরবর্তী উদ্ধার অভিযান কীভাবে পরিচালিত হবে জানতে চাইলে
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখন তদন্ত কমিটির
প্রধান ডিরেক্টরের (অপস) সঙ্গে বসব। বসে প্ল্যান করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। আমরা আমাদের
উদ্ধার অভিযান বন্ধ করি নাই। তবে আমরা কোনো ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করতে পারিনি। শুধু
লক কাটার ব্যবহার করতে পেরেছি।’
ভবনের ভেতরে ধ্বংসস্তূপে আপনারা অস্বাভাবিক কিছু দেখেছেন কি না, বিস্ফোরণের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপ, ধুলাবালি ও ধোয়া দেখেছি। বিস্ফোরণের কী কারণ হতে পারে তা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে।’
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টার-সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে কুইন ক্যাফে হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনার দিনই ১৮ জন প্রাণ হারান। বুধবার আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২০ জনে।
দুর্ঘটনায় আহত ১৭৫ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জনকে ঢামেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে । এ ছাড়া শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ১০ জনকে।