প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২২:১৯ পিএম
রাজধানীতে বৃষ্টি। ছবি : সংগৃহীত
তীব্র গরমে সুখের বৃষ্টি উপভোগ করল রাজধানীবাসী। ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) থেকেই। শনিবার মেঘলা ছিল রাজধানীর আকাশ। রবিবার সকালে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হলেও সকালের পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ মুষলধারায় বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, রবিবার ঢাকায় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবারও ঢাকায় একই অবস্থা বিরাজ করবে। আকাশ মেঘলা থাকবে। কয়েক দফা বৃষ্টি হবে। সারাদেশে ২২ মার্চ (বুধবার) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত, ঝড়, বজ্রপাত, দমকা হাওয়াসহ কালবৈশাখীর আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রবিবার ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলিতে সর্বোচ্চ ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ফরিদপুর ও মাদারিপুরে ৩ মিলিমিটার। রাজশাহী বিভাগে সর্বোচ্চ তাড়াশ ও বদলগাছীতে ২২ মিলিমিটার ও সর্বনিম্ন রাজশাহীতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রংপুরেই সর্বোচ্চ ৭ ও ডিমলায় সর্বনিম্ন। ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনায় ৮২ মিলিমিটার যা সারাদেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ৫৫ মিলিমিটার। সিলেটে সর্বোচ্চ ৩২ ও শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন ১৫ মিলিমিটার। চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লায় সর্বোচ্চ ১১ ও রাঙ্গামাটিতে বৃষ্টিপাত হয়নি। খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ৩২ মিলিমিটার ও চুয়াডাঙ্গায় সামান্য। বরিশাল বিভাগের খেপুপাড়ায় সর্বোচ্চ ১৬ ও ভোলায় সর্বনিম্ন ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের শ্রেণিভাগ সম্পর্কে ওমর ফারুক বলেন, হালকা বৃষ্টিপাত ১-১০ মিলিমিটার ২৪ ঘণ্টায়। মাঝারি ১১-২২ মিলিমিটার, মাঝারি ধরনের ভারী ২৩-৪৩, ভারী ৪৪-৮৮ এবং অতি ভারী ৮৯ মিলিমিটার।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্নস্থানে ১০০ থেকে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে দেশের সব স্থানেই সমান হবে না। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগে বেশি বৃষ্টি হবে।
তিনি জানান, এ সময়ে বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য কৃষকদের বড় গাছের নিচে আশ্রয় না নিয়ে বরং ছোট গাছের নিচে আশ্রয় নিতে হবে। কোথাও অবস্থানকালে মাথার চুল দাঁড়িয়ে গেলে দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করতে হবে। কেননা সেখানে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
এদিকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুকে ২২ মার্চ বাংলাদেশের সকল জেলায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতসহ কালবৈশাখী ঝড়ের কথা জানিয়ে কৃষকদের বিশেষ কৃষি পরামর্শ দিয়েছে। সেখানে বলা হয়, সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে; পরিপক্ক ফসল দ্রুত সংগ্রহ করে শুকনো ও নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে; বোরো ধানে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট রোগ দেখা দিতে পারে। এ রোগ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য ঝড় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার এবং ৩ দশমিক ৫ কেজি জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। তবে ধান গাছ যদি থোড় অবস্থা পার হয়ে থাকে তাহলে ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম পটাশ সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট এবং ২০ গ্রাম জিংক ভালোভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। ঝড় বৃষ্টির পরপর ইউরিয়া সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে; জমিতে যেন পানি জমে থাকতে না পারে সেজন্য নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখতে হবে; দণ্ডায়মান কলাগাছ, আখ ও উদ্যানতাত্বিক ফসলের জন্য খুঁটির ব্যবস্থা করতে হবে এবং বৃষ্টিপাতের পর অবস্থা বুঝে পাট ও সবজি বীজ বপন করতে হবে।