প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১৯:১২ পিএম
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৩৫ পিএম
ফরিদপুরের ডিবি পুলিশের ওসি রাকিবের ব্যক্তিগত রোষানল থেকে বাঁচতে জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফরিদপুরের ব্যবসায়ী ছামাদ খান।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে তিনি সংবাদ সম্মেলনটি করেন।
লিখিত বক্তব্যে ছামাদ খান বলেন, আমি ওষুধ ব্যবসায়ী। পাশাপাশি রেন্ট-এ কারের ব্যবসা রয়েছে। ওসি রাকিব ২০১৭ সালে আমার থানা মধুখালীতে কর্মরত ছিলেন। সে সময় তিনি একটি পারিবারিক মামলা তদন্ত করেন এবং আমার কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। আমি তখন ৩০ হাজার টাকা দিই। চাহিদা মতো তাকে টাকা দিতে না পারায় তখন আমাকে হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সে সময় আমার একটা মাইক্রোবাস ভাড়ায় চলতো। মিথ্যা মামলায় আমার সে গাড়িটি জব্দ করা হয়। পরে গাড়িটি ছাড়িয়ে আনি। গত ১৯ জুলাই আমার ড্রাইভার আমাকে না জানিয়ে ৪ জন যাত্রী নিয়ে মধুখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ডিবির এস আই জাকির ও আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিকে গাড়িতে তোলেন। এরপর ফরিদপুর রাজবাড়ী রাস্তার মোড় পৌঁছালে গাড়িটি দাঁড় করানো হয়। তখন আমার ড্রাইভারকে একটি মোটরসাইকেলে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিও সেখানে নেওয়া হয়।
ছামাদ খান বলেন, ওসি রাকিব ২০ জুলাই ফোন করে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ফোন কেটে দেন এবং এস আই জাকির আমাকে ফোন করে ওসি রাকিবের কথা বলে ফের ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা দিতে চাইনি বলে গাড়ির বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এই মামলায় আমার ড্রাইভার প্রশান্ত কুমারকে পলাত দেখানো হয়েছে। অথচ আমার ড্রাইভার প্রশান্ত কুমার সাহাকে ধরে নিয়ে যায়। দুই লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে পরের দিন ছেড়ে দেওয়া হয়। ফরিদপুর জেলা এসপি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ওসি রাকিব ২১ জুলাই রাতে আমাকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ করে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে সারা জীবন জেলে রাখার হুমকি দেয়। এ সময় আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি। আমি তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে পুলিশ প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও পুলিশ হেড কোয়ার্টারে একটি চিঠি দিয়েছি ডাক বিভাগের মাধ্যমে জিপি করে। এরপর থেকে তার দৌরাত্ম আরও বেড়েছে। সেই থেকে প্রতিদিন ডিবি আমাকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে, আমি জীবনের ভয়ে ঠিকমতো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছি না। যে কোনো সময় ওসি রাকিব আমাকে মেরে ফেলতে পারেন, অথবা আমাকে ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলা দিতে পারে।
এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ছামাদ খান গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচারসহ জীবনের নিরাপত্তা দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয় পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে ছামাদ একজন মাদক ব্যবসায়ী। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক সংগ্রহ করে ফরিদপুরসহ নানা জায়গায় তার নিজের গাড়ি ব্যবহার করে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতো। তার সেই গাড়িটি রেন্ট-এ কারে চলে। গাড়ি থেকে আমরা মাদকসহ আসামি গ্রেপ্তার করি। পরে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নানা তদবির করে। গাড়িটি ছেড়ে না দেওয়ায় ছামাদ আমার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক অভিযোগ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।