৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০৯ পিএম
ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাস্টম হাউসের বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ক্যামেরা থেকে ফুটেজ সরিয়ে ফেলার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ হেফাজতে থাকা কাস্টমসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ডিবিপ্রধান মোহম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটির তদন্ত শুরু করেছিল সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। পাশাপাশি ডিবিও ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় ডিবি। আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতে সেই গুদামের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আটজনকে ডিবির কাছে পাঠিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে হারুন অর রশীদ বলেন, ওই গুদামে কারা গেছেন, অন্য কারও যোগাযোগ ছিল কি না, দায়িত্ব হস্তান্তরে কোনো সমস্যা ছিল কি না, সিসিটিভি লাগানো ছিল কি না, ক্যামেরা নষ্ট ছিল কি না খুঁটিনাটি সব বিষয়ে তদন্ত চলছে। সন্দেহভাজন আটজন ছাড়াও যাদের প্রয়োজন মনে হবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে। কাস্টমসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত কি না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কারও বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েবের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা জানার কথা, কর্তৃপক্ষও জানবে স্বাভাবিক। অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা সবগুলো বিষয় বের করতে পারব বলে আশা করছি।’
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বিমানবন্দরের মতো একটা জায়গায় এতগুলো সোনা চুরি হয়ে গেল অথচ কেউ কিছু জানবে না? জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যপ্রমাণ সব বিচার-বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাবে।
কাস্টমসের গুদাম একটি সংরক্ষিত এলাকা, ডিবির কর্মকর্তাদেরও অনুমতি ছাড়া সেখানে যাওয়ার সুযোগ নেই। এতে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে কি না- জানতে চাইলে হারুন বলেন, আশা করছি- স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারব।
গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে স্বর্ণ গায়েবের বিষয়টি জানাজানি হয়। পরদিন এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় ডিবি। এর আগে থানা পুলিশের তদন্তে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িত হিসেবে দুজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও এক সিপাহিকে শনাক্ত করে থানা পুলিশ। ওই তিনজন হলেন কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম শাহেদ এবং সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার। পুলিশের দাবি, চুরি করা স্বর্ণ বায়তুল মোকাররম ও তাঁতীবাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ওই দুই মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীও এতে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সঙ্গে শনাক্ত হওয়া আসামিদের মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেড় কেজি স্বর্ণ কিনে তা গুদামের ভল্টে রাখা হয়েছে বলেও তথ্য পেয়েছে পুলিশ।