প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৮ পিএম
জাতীয় প্রেসক্লাবে শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয় শীর্ষক সংলাপ। প্রবা ফটো
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত আট হাজার ৮৩২ জন শিশু সহিংসতার শিকার হয়, আর মামলা হয় চার হাজার ৬৭৫টি। এর মধ্যে দুই হাজার ৫৯০ শিশুকে হত্যা করা হয়। ধর্ষণের শিকার হয় তিন হাজার ৫৯৬ জন ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় ৫৮০ জন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আয়োজনে বাংলাদেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয় শীর্ষক সংলাপে এ সব তথ্য জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড প্রোটেকশন অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস গভার্নেন্সের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সমন্বয়কারী তামান্না হক রীতি, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল প্রমুখ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, ধর্ষণের শিকার শিশুদের মধ্যে ২২৭ জন ছেলে। অনলাইনে যৌন হয়রানির ঘটনা (পর্নোগ্রাফি) ৩০টি, শিক্ষক দ্বারা যৌন হয়রানির ঘটনা ১০৬টি, শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ৫২৫টি।
পরিসংখ্যানে জানানো হয়, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ১৫ থেকে ১৯ বছরের মেয়েদের বাল্যবিয়ে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
সংলাপে উপস্থাপিত শিশু অধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু আইন পাশ হয়েছে নয় বছরেরও বেশি সময় আগে, কিন্তু আইনের বিধিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, যার ফলে আইনটির অর্থবহ বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বলেন, ‘বাবা মা যে শখ করে বাল্যবিয়ে দেয় এমন নয়, এর সঙ্গে অভাবের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সেখানে থেকে উত্তরণের পথ দেখোতে হবে। আমরা শিশুর ওপর সহিংসতার মামলার ট্রায়াল ওয়াচের (বিচার পর্যবেক্ষণ) চিন্তাভাবনা করছি। এ বিষয়ে আমরা বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও কথা বলেছি।’
জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আমাদের দেশে অনেক সুন্দর কিছু আইন আছে। কিন্তু সেটা যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা না হয়, তাহলে আইন থেকেও কোনো লাভ হয় না। এছাড়াও ছোট থেকেই শিশুদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে বাবা মায়ের। বাবাকেও বন্ধু হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সচেতনতার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিকল্পনার প্রকৃত বাস্তবায়ন এবং সঠিক খাতে পর্যাপ্ত বাজেট ও বাজেট পর্যালোচনা প্রয়োজন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।