প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:১৬ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:০৫ পিএম
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে শনিবার রংধনু গ্রুপের ১০ জন কর্মীকে অপহরণের পর ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। প্রবা ফটো
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রংধনু গ্রুপের ১০ জন কর্মীকে অপহরণের পর ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে। সন্ত্রাসীরা রড, পাইপ ও লাঠি দিয়ে পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, জোর করে তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিয়েছে। পরে বসুন্ধরার গ্রুপের কর্পোরেট অফিস থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ভূমিদস্যু বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম ও তার ছেলে গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশে তাদের অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা হবে।
অপহৃতরা হলেন, রংধনু গ্রুপের কর্মী ইমতিয়াজ হোসেন, মো. ফরিদ হোসেন, শাহীন আলম, মো. রাসেল, মো. ইয়াসিন, অন্তর, জুনায়েদ, মো. সাব্বির, হোদায়েত ও তোফাজ্জল।
রংধনু গ্রুপের কর্মী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শনিবার বেলা
১১টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কে ব্লকে আমরা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান হাউজে যাই।
দুপুর ১২টার দিকে ৪টি গাড়িতে করে বসুন্ধরা বেশ কিছু নিরাপত্তাকর্মী ও আনসারের কয়েকজন
সদস্য এসে আমাদেরকে মারধর করে তাদের গাড়িতে তোলে। পরে একটি নির্জন ও অন্ধকার রুমে নিয়ে
যাওয়া হয়। সেখানে আমাদের সবার নাম ঠিকানা লেখে এবং নানা কথা জিজ্ঞাসাবাদ করে মারধর
করে। পরে তারা সাদা কাগজে আমাদের সবার স্বাক্ষর রাখে। আমাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাউকে টয়লেটে পর্যন্ত যেতে দেয়নি।
কোন খাবার খেতে দেয়নি। পানিও খেতে দেয়নি। আমাদেরকে পরিবার বা অফিসের কারও সঙ্গে যোগাযোগ
করতে দেয়নি। পরে সেখানে সন্ধ্যার দিকে ভাটারা থানা পুলিশ আসে। পুলিশ যাওয়ার পর আমাদেরকে
বসুন্ধরার গ্রুপের কর্পোরেট অফিসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে
থানায় নিয়ে আসে।’
রংধনু গ্রুপের আরেক কর্মী হেদায়েত বলেন, ‘আমরা সকালে কে ব্লকে চেয়ারম্যান
সাহেবের বাড়িতে যাই। সেখানে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই ৪টি গাড়িতে করে বসুন্ধরা গ্রুপের
বেশ কিছু সিকিউরিটি গার্ড ও আনসার সদস্যরা আমাকে ধরে নিয়ে গাড়িতে তোলে। আমাদের গাড়ি
চালককে আগেই ধরে নিয়ে যায় তারা। আমাদেরকে প্রেসের মতো একটি গোডাউনে আটকে রেখে মারধর
করে সাদা কাগজে সই নেয়। সবার নাম ঠিকানা সাদা কাগজে লিখে রাখে। বিভিন্ন বিষয়ে জেরা
করে। আমাদের ছবি তোলে ও ভিডিও করে রাখে। আমরা সারাদিন বহুবার চিৎকার করে পানি চাই,
তাদেরকে অনুনয় বিনয় করে বলি, আমাদেরকে একটু পানি অন্তত দেন। তাদের একটাই জবাব, সম্ভব
নয়। আমাদের কোনো ধরনের খাবারাও দেয়নি। প্রস্রাব করতে চাইলে বলে, বাইরে যাওয়া সম্ভব
নয়, বোতলে প্রস্রাব করো। এভাবে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা আমাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। পরে
ভাটারা থানা পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম
বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশের একটি টিম গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে আনে। ভুক্তভোগীরা
অভিযোগ দিলে পুলিশ আইনগত ব্যাবস্থা নিবে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল হোসেন বলেন, রংধনু
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়ে আমরা ১০ জনকে বসুন্ধরার কর্পোরেট অফিস থেকে উদ্ধার করেছি।
এখন তারা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।