প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৫ পিএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:২০ পিএম
বিটিআরসির কার্যালয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিটিআরসি। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন জুয়া বন্ধে সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এক্ষেত্রে অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপের তথ্য জানাতে ডিসিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেসব তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসির কার্যালয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানায় বিটিআরসি।
বিটিআরসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে সর্বদা কাজ করছে বিটিআরসি। গত ১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আগামী দশকে টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্বকে অনেকদূর এগিয়ে নেবে। সেখানে আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। সেই এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত আমরা করছি।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক বিভিন্ন লিংক অপসারণে বিটিআরসি কাজ করছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে এর অপব্যবহারও বেড়েছে। আমরা ফেসবুক, গুগল কর্তৃপক্ষের কাছে যে লিংকগুলো সরানোর অনুরোধ করি তার শতভাগ রক্ষা হয় না। ফেসবুক হ্যাকিং সম্পর্কে অভিযোগগুলো থেকে সাড়া পাই। আমরা অনলাইনে জুয়া, পর্নোগ্রাফিগুলো বন্ধ করার কাজ করছি। অনলাইন জুয়া বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, জুয়ার জন্য যে ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলো বেশি ব্যবহার হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে যেন বিটিআরসিকে জানানো হয়। তাহলে সংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যমগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।’
মোবাাইল ইন্টারনেটের দাম আরও কমানোর কোন পরিকল্পনা বিটিআরসির আছে কিনা- এ প্রশ্নে খলিল-উর-রহমান বলেন, ‘ব্যান্ডউইথের দামে পরিবর্তন আসবে। ক্যাশ সার্ভার বসছে অনেক। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই দাম নির্ধারিত হবে।’ ডেটা প্যাকেজের দামের বিষয়টি আবারও বিবেচনা করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
মোবাইল অপারেটরদের সেবা সম্পর্কে বিটিআরসির কাছে গ্রাহকদের কী ধরণের অভিযোগ জমা হচ্ছে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অভিযোগগুলো নিয়ে আগামী মাসে অপারেটরদের সঙ্গে বিটিআরসির বৈঠক হবে। ওই সময় অভিযোগগুলো সম্পর্কে জানানো হবে।’
মত বিনিময় সভায় একটি মোবাইল ফোন অপারেটরকে ৮৫০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দ দিলে অন্য অপারেটরদের কী ধরণের সংকট হতে পারে সে বিষয়টিও উঠে আসে। বিটিআরসির পক্ষে বলা হয়, বিষয়টি সম্পর্কে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাব দেন বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান বলেন, কোনও অপারেটরকে এমন সুবিধা দেওয়া হবে না যাতে অন্য অপারেটরের গ্রাহকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সব অপারেটরের সাথে আলোচনা করেই ৮৫০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাওয়ার কোম্পানিগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় টাওয়ার স্থাপন করতে গিয়ে যেভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে সেসব বাধা দূর করার জন্য বিটিআরসি সচেষ্ট রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়েও রেডিয়েশন ভীতি থাকায় পর্যাপ্ত টাওয়ার বসাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি বাংলাদেশে বর্তমানে যে রেডিয়েশন আছে তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।’
মত বিনিময় সভায় বিটিআরসি কতটা স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারছে সে প্রশ্নও ওঠে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিটিআরসি দেশের একটি ভাইব্রেন্ট (প্রাণবন্ত) সংস্থা। আমাদের ভুলভ্রান্তি হতে পারে।’ এক্ষেত্রে তিনি গণমাধ্যমের পরামর্শ আশা করেন। সাংবাদিকদের তথ্যের প্রয়োজনে বিটিআরসির সাড়া দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে দেখবেন বলেও জানান তিনি।
বিটিআরসির সচিব মো. নূরুল হাফিজের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ, ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, আমিনুল হক এবং সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের মহাপরিচালকরা।