× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঢাকা ওয়াসা

রোজার মধ্যে পানির কষ্ট

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৮ এএম

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১১:০৪ এএম

ঢাকা ওয়াসা ভবন। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা ওয়াসা ভবন। ছবি : সংগৃহীত

‘রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে পানির কষ্টে আছি। গত এক সপ্তাহ ধরে আমাদের এলাকায় দিনের বেলায় পানি আসে না। রাতেও অনেক সময় পাই, অনেক সময় পাই না।’ বলছিলেন রাজধানীর মিরপুর টোলারবাগ এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান সরকার। শুধু টোলারবাগ নয়, রাজধানীর অনেক এলাকাতেই রোজার মধ্যে পানির কষ্টে আছেন নগরবাসী। রোজার শুরু থেকেই মালিবাগ, গুলবাগ, শেওড়াপাড়া, লালবাগ, আজিমপুর, রায়েরবাগ, দক্ষিণখান, জুরাইন, মিরপুর, কুড়িল ও ভাটারা এলাকায় পানির অভাব বেশি। তা ছাড়া অনেক এলাকার পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধ দেখা যাচ্ছে।

নগরীর অনেক এলাকায় পানির জন্য ইফতার, সেহরিসহ আনুষঙ্গিক কাজকর্ম সারতে ভোগান্তিতে পড়ছেন নাগরিকরা। সারা দিন রোজা রেখে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা। তবে ঢাকা ওয়াসার দাবি, রাজধানীতে পানির সংকট নেই। এলাকাভিত্তিক কিছু সমস্যা রয়েছে। তা সমাধানে কাজ করছেন তারা। 

মনিরুজ্জামান সরকার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পানির জন্য অনেক জায়গায় কথা বলেছি। কোনো সমাধান হচ্ছে না। যখন পানি আসে তখন সবাই জমা করে রাখে। এই জমা পানি দিয়ে একটি পরিবারের সারা দিন চলা অসম্ভব। আমার বাড়িতে ৫০ হাজার লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। পাচ্ছি ২০ হাজার লিটার।’ 

মালিবাগের শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ খান বলেন, ‘সারা রাত পানি থাকে না। আসে ভোরবেলা। তখন যদি কোনো কারণে মিস করি, তাহলে সারা দিন পানি ছাড়া থাকতে হয়। তাই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি কখন ওয়াসা পানি দেবে।’ রোজার আগে থেকেই গুলবাগ এলাকাতেও পানির অভাব চলছে। মালিবাগের মারুফ মার্কেট এলাকায় অবস্থিত ওয়াসার একটি গভীর নলকূপে সমস্যা হওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনের ‘ট’ ব্লক, আগারগাঁও, রায়েরবাগ, নামা শ্যামপুর ও মোহাম্মদবাগ এলাকায়ও একই ধরনের সমস্যায় পড়ছেন নগরবাসী। 

ঢাকা ওয়াসা সূত্র বলছে, পানির সংকট দেখা দিলে ঢাকা ওয়াসা গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে থাকে। সংস্থাটির মডস জোনে পানির গাড়ির চাহিদা জানানো হলে গাড়িতে করে পানি বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ঢাকা ওয়াসার ১০টি মডস জোন রয়েছে। প্রতিটি ছয় হাজার লিটারের বড় গাড়ির পানির দাম ৬০০ টাকা। তবে সিরিয়াল দিয়েও নির্ধারিত সময়ে পানি না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে নগরবাসীর। একই সঙ্গে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

রোজার শুরু থেকেই শেওড়াপাড়া এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শামীম সরণিতে ওয়াসার দক্ষিণ-পশ্চিম শেওড়াপাড়া পানির পাম্প নষ্ট। ফলে পুরো শেওড়াপাড়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের ছয়তলায় সাতটি পরিবার বাস করে। সারা দিন এক গাড়ি পানি পাই। এই পানি দিয়ে সেহরি, ইফতার, ওজু-গোসলসহ সব সারতে হচ্ছে।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানান, সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে পানির সংকট হয়। এই সময় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় কিছু জায়গায় গভীর নলকূপে উৎপাদন কমে যায়। এবার মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে রমজান শুরু হওয়ায় পানির সংকট তীব্র হয়নি। ওয়াসা বলছে, এরই মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার শেওড়াপাড়ার শামীম সরণি পানির পাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় মেরামতের কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

ওয়াসা বলছে, ঢাকায় বর্তমানে পানির চাহিদা দৈনিক গড়ে ২৬০ কোটি লিটার। ওয়াসার উৎপাদনসক্ষমতা রয়েছে ২৯০ কোটি লিটার পানি। অর্থাৎ ঢাকায় পানির যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে ওয়াসার উৎপাদন তার চেয়ে বেশি। কিন্তু সব এলাকায় রেশনিং করার ব্যবস্থা না থাকায় কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এক এলাকায় পানির সংকট দেখা দিলে বা গভীর নলকূপ নষ্ট হলে আশপাশের এলাকা থেকে পানি এনে চাহিদা মেটানো হয়। একে ‘রেশনিং’ বলা হয়। ওয়াসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো এলাকায় পানির সমস্যা হলে ঢাকা ওয়াসার হটলাইন ১৬১৬২ নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সহিদ উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। কিছু স্ট্যান্ডবাই পাম্প চালু করা হয়েছে। যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানে রেশনিং করে পানি দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা