নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩১ পিএম
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪ ২০:২২ পিএম
রাজধানীতে ফয়সাল হত্যায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। প্রবা ফটো
রাজধানীর পল্লবী থানার সাড়ে ১১ নম্বর এলাকায় আধিপত্যের দ্বন্দ্বে হামলায় প্রাণ যায় কারচুপি (জামার ডিজাইন) কারিগর ফয়সালের। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে আহত রানা ওরফে রানু নামের অপর এক তরুণ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফয়সাল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং পটুয়াখালী ও নেত্রকোণায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, রামদা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহিন ওরফে নাডা শাহিন, মো. মুরাদ হোসেন, পারভেজ আহম্মেদ, মো. ইয়াসিন, মো. সাইফুল ইসলাম সাইমন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. হৃদয় ওমর সাফি গন্ডার, মো. রাজিব মিয়া, শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু ও তানজিলা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ফয়সাল নামের একজন নিহত হয়। এ বিষয়ে মামলা হলে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, ১৫ মার্চ বিকালে মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পেপার সানী গ্রুপের সদস্য মো. শাহিন ও তার বোন তানজিলার সঙ্গে একই গ্রুপের সদস্য ফয়সাল ও রানা ওরফে রানুর মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরে শাহিন ওরফে নাডা শাহিন প্রতিশোধ নিতে সায়মুন গ্রুপের রাব্বী ওরফে গালকাটা রাব্বীকে জানায়।’
হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘পরের দিন ফয়সাল, তার বন্ধু রানাসহ আরও দুজন রিকশায় করে পল্লবীর কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে বাসায় ফিরছিল। পথে পল্লবী থানার সেকশন-১২ এলাকায় পৌঁছলে চাপাতি, তলোয়ার, রামদা, সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে তাদের আহত করা হয়।’
গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, ‘নিহত ফয়সালের মা এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বন্ধু রানা ওরফে রানু আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে ফয়সালের বাবা শাহাদাত হোসেন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিরপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রায়ই মাদক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটায়। একই ঘটনা উত্তরায় ঘটেছে। উত্তরা এলাকায় বেশ কিছু বড় ভাইদের নাম পেয়েছি যারা কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া মিরপুর ও উত্তরার পাশাপাশি মোহাম্মদপুরেও বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। রাজধানীর কোনো এলাকায় বড় ভাইদের বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। কোনো বড় ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের প্রত্যেকটি টিম রাজধানীর প্রত্যেক এলাকায় কাজ করছে।’
ফয়সাল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিবির মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান। তিনি বলেন, ‘মিরপুর-পল্লবী এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। এ ঘটনা ছাড়াও অতীতে কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। জড়িতদের ধরতে ধারাবাহিক অভিযান চলছে।’