ডিপোতে ১৪ বাসে আগুন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:০৩ পিএম
রাজধানীর ডেমরায় লন্ডন এক্সপ্রেসের ডিপোতে ১৪টি ভলবো বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনাকে অনেকেই নাশকতা মনে করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে ১৪টি বাস পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় অবাক হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোম্পানির পক্ষ থেকে একাটি সাধারণ ডায়েরি করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত সোমবার রাত ৮টায় ডেমরার ধার্মিকপাড়া এলাকায় লন্ডন এক্সপ্রেসের ডিপোতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। রাত ৯ টা ৪৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও রক্ষা করা যায়নি বাসগুলো। ১৪টি বাস পুড়ে যায় সম্পূর্ণভাবে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া জানান, তাদের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে। কমিটির সদস্যসচিব ডিএডি মো. শামসুজ্জোহা এবং সদস্য ডেমরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র অফিসার ওসমান গণি। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৮টা পর্যন্ত কোনো মামলা, অভিযোগ অথবা সাধারণ ডায়েরি করা হয়নি। তবে বাস কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ একটি বাসে আগুন দেখতে পান তারা। এরপর চোখের পলকে আগুন পাশের অন্যান্য বাসগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলেও তারা পৌঁছাতে পৌঁছাতে ১৪টি বাসে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই তাদের কাছে এটি নাশকতা মনে হচ্ছে।
নাশকতা কিনা প্র্রশ্ন করা হলে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। নাশকতার আলামত পাওয়া গেলে ডিএমপি আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’ তবে পুলিশের একটি সূ্ত্র জানিয়েছে, আগুনের ঘটনাকে নাশকতা বলে অনেকের সন্দেহ হচ্ছে। এত দ্রুত এতগুলো বাস পুড়ে যাওয়া অবিশ্বাস্য। প্রতিটি বাসের দাম কোটি টাকার উপরে। বাসগুলো এমনভাবে পুড়েছে যে লোহার বডিগুলোও পুড়ে গেছে। শুধু লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো আছে।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি বাসে জ্বালানি ছিল। ভেতরে ডেকারেশন ছিল ব্যাপক। ডেকারেশনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম দাহ্য ছিল। তাই দ্রুত আগুন ধরে যায়, দ্রুত জ্বলতে থাকে। মূলত প্রতিটি বাসে জ্বালানি থাকায় আগুন সব বাসে ছড়িয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন বেড়ে উঠেছে। তাৎক্ষণিকভাবে মালিকপক্ষ আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি বলে তিনি জানান।
ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা বলেন, ফায়ার সার্ভিস আগুনের খবর পায় ৮ টা ৫০ মিনিটে। ঘটনাস্থলে দুটি ইউনিট যায় ৮ টা ৫৯ মিনিটে। অর্থাৎ আগুনের খবর পাওয়ার পর মাত্র ৯ মিনিটে পৌঁছায় দুটি ইউনিট। তখন সব বাসে আগুন থাকায় এবং আগুন বড় হয়ে যাওয়ায় আরো ইউনিটের সহযোগিতা চাওয়া হয়। তাই আরও তিনটি ইউনিট পাঠানো হয়।