কেএনএফের কারণে ঢাকায় কোনো শঙ্কা নেই : ডিএমপি কমিশনার

বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) অপতৎপরতাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কোনো শঙ্কা নেই। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় ঈদগায়ে নিরাপত্তা প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সারা দেশের সার্বিক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ঈদে ডিএমপি এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। বান্দরবানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের যে অপতৎপরতা চলছে, এসব ঘিরে রাজধানীতে কোনো শঙ্কা নেই। যে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কেএনএফের সংশ্লিষ্টতা ছিল তাদেরও তৎপরতা নেই। এখন পর্যন্ত ঈদ ঘিরে কোনো ধরনের জঙ্গী তৎপরতার আগাম খবর নেই। তারপরেও সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহে ঢাকার প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, কূটনৈতিক ব্যক্তি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। সকাল সাড়ে ৮টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ জামাতে ৩৫ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

জাতীয় ঈদগাহের জামাতসহ সারা ঢাকার সকল ঈদ জামাতে ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধান জামাতে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। জাতীয় ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায় এসবি সদস্যরা ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। পুরো এলাকা সিসিটিভি, ড্রোন পেট্রোলিং ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। পোষাকধারী পুলিশ সদস্যরা প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ের সাধ্যমে তল্লাশি করবেন। ডিবি-এসবিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সাদা পোশাকে অবস্থান করবে।

প্রধান ঈদজামাত ঘিরে ১০টি জায়গায় পার্কিং ব্যবস্থা করেছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ। ঈদ জামাত ঘিরে ৮টি রাস্তা ডাইভারসন দেওয়া হবে, যাতে কোনো রকমের হয়রানি ছাড়া মুসল্লিরা আসতে পারেন। নারীদের জন্য নামাজের পৃথক ব্যবস্থা থাকবে, তাদের নারী পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি করবেন।

এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। ঢাকায় ১৮৪টি ঈদগাহে ও ১ হাজার ৪৮৮টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি ঈদ জামাতের জন্য আলাদা নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। একটি জামাতও নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে থাকবে না।

নাগরিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা ঈদের নামাজে অংশ নিতে আসবেন, তারা আমাদের তল্লাশি কার্যক্রমে সাহায্য করবেন। কেউ দাহ্য বা ধারাল বস্তু নিয়ে আসবেন না। যেকোনো সমস্যা হলে পুলিশকে জানান। জামাত থেকে বের হওয়ার সময় ধৈর্যের সঙ্গে সুশৃঙ্খলভাবে বের হবেন।

বাসের বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা বাস মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার মিটিং করেছি। সবাই বলেছেন, তারা কোনোভাবেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া নেবেন না। ডিএমপি এলাকার কাউন্টারগুলোতে সার্বক্ষনিক পুলিশি পাহরা রয়েছে, যেন অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নিতে পারি। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সোর্স ছাড়া বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে, যেন বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ আসলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।