পিরোজপুর থেকে নাগরিক সাংবাদিক রুবেল মিয়া নাহিদ
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৫:০৩ পিএম
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০৮ পিএম
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পৌরশহর ও মাছুয়ার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের উপকূলীয় শিশুদের জন্য চারটি উপকূল পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বই পড়া থেকে গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোররা এক প্রকার বঞ্চিতই বটে। এ সমস্যা উত্তরণে শিশু-কিশোরদের হাতে বই তুলে দিতে মঠবাড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তোলা হয়েছে স্কুলভিত্তিক উপকূল পাঠাগারগুলো।
জেলেপল্লীর শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাতেখড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এ পাঠাগার। নবনির্মিত এ পাঠাগার ঘিরে এখন বই পড়ার আনন্দে মেতেছে ৭ নম্বর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮১ নম্বর উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৬ নম্বর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৯ নম্বর বকসির ঘটিচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী। দেয়াল পেইন্টিং করা স্কুলভিত্তিক এক একটি পাঠাগারে শোভা পেয়েছে শতাধিক বই। শিশুতোষ, সাধারণ জ্ঞান, ছোটদের গল্পের বই, ধর্মীয়, সাহিত্য ও বিজ্ঞানসম্মত বই দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহ করে আসছেন সংগঠনের সদস্যরা। এসব বই সংগ্রহের পেছনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন লেখক, কবি ও সাহিত্যানুরাগীরা।
স্কুল খোলার দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য খোলা থাকবে এ পাঠাগারগুলো। শিশুরা বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পড়তে পারবে বইগুলো। পাঠ্যবইয়ের বাইরে এসব বই পড়ে শিশুরা জানতে পারবে আরও অনেক কিছু। সব মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এ পাঠাগার বইয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নতুন করে জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করার সুযোগ করে দেবে—এমনটাই মনে করছেন পাঠাগারের উদ্যোক্তারা।
৭ নম্বর উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দোলা হালদার বলে, ‘আমাদের স্কুলে পাঠাগার করায় ক্লাসের বইয়ের পাশাপাশি পাঠাগারের বইগুলো পড়ে আমরা আরও অনেক কিছু শিখতে পারব। এখান থেকে আমরা ছড়া ও গল্পের বই নিতে পারব। আমরা অনেক খুশি হয়েছি।’
মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডা. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, ‘হাতেখড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগগুলো প্রশংসনীয়। তাদের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে জেলেপল্লীর অনেক শিশু ও পরিবার। তাদের এ স্কুলভিত্তিক উপকূল পাঠাগার উদ্যোগটি আমার ভালো লেগেছে।’
৭ নম্বর উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন অধিকারী বলেন, ‘হাতেখড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগটি সত্যিই অনেক ভালো একটি উদ্যোগ। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি পাঠাগার স্থাপন করায় আমি এবং আমার স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সবাই খুব খুশি হয়েছি। তাদের এ পাঠাগারের মাধ্যমে আমাদের স্কুলের শিশুরা আরও অনেক কিছু শিখতে পারবে।’