× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি গার্লস গাইড সদস্যদের

ঢাকা থেকে নাগরিক সাংবাদিক সৃজন ঘন্ট

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০২ পিএম

লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের গার্লস গাইডের সদস্যদের নিয়ে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব শীর্ষক অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো

লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের গার্লস গাইডের সদস্যদের নিয়ে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব শীর্ষক অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো

বেসরকারী নারী উন্নয়ন সংস্থা “নারী মৈত্রী” গতকাল রবিবার লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ গার্লস গাইডের সদস্যদের নিয়ে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব"শীর্ষক একটি ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। উক্ত আয়োজনে গার্লস গাইডের সদস্যরা এ দাবি তুলে ধরে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ এর প্রধান  অধ্যক্ষ ড.মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো.আব্দুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রামস ম্যানেজার,ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে),হুমায়রা সুলতানা, কমিউনিকেশন ম্যানেজার,ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)বাংলাদেশ,এবং বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন নাসরীন আহমেদ,উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি। তিনি বলেন,পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এর ভুক্তভোগী। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস,গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশু উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে , রেস্তোরাঁ সহ সকল পাবলিক পরিবহনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা গেলে সেখানে আগত অধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৫% পর্যন্ত হ্রাস পাবে, শ্বাসতন্ত্র ভালো থাকবে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। মৃত্যুর এই ভয়াল ছোবল থেকে বেরিয়ে আসতে নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই। গার্লস গাইড এর সদস্যদের সামনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর নাসরিন আকতার।

তিনি জানান,তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং কর্মক্ষেত্র,পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত)যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।  

সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা;তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর)কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা;বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।

তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করনে গুরুত্ব দিয়ে মো.আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, প্রস্তাবিত সংশোধনী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো অধূমপায়ী ও নতুন প্রজন্মকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করা। তরুণ প্রজন্ম যাতে নতুন করে ধূমপানে আসক্ত হয়ে না পরে সেজন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী ও খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও ই-সিগারেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধের করতে হবে এবং পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে সকলকে রক্ষা করতে ধূমপানের জন্য সকল ধরনের নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করতে হবে।  

এছাড়া তামাকের কারণে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। এবং প্রতিবছর হারাচ্ছি ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ তামাকের কারনে। এই প্রাণহানি কমানো সম্ভব হবে যদি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা হয়। তাই আমাদের সকলের একটাই দাবি আগামী প্রজন্মকে বাঁচাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা হোক। 

হুমায়রা সুলতানা বলেন, একটি সুন্দর জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা। তামাক প্রতিষ্ঠানগুলো নানান রকম লোভনীয় এবং অনৈতিক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে যা যুব সমাজ কে বিপদের দিকে ধাবিত করছে । তাই আমার সবার কাছে আবেদন, আমরা সবাই একত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার জন্য একতাবদ্ধ হই।

নারী মৈত্রীর তামাক নিয়ন্ত্রণ সকল ধরনের কার্যক্রমে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত)  নাসরীন আহমেদ। তিনি বলেন তামাক অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের সবাইকে হতে হবে সচেতন।  এই ধরনের চমৎকার উদ্যোগের জন্য নারী মৈত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ সকল কার্যক্রমে লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের পক্ষ থেকে নারী মৈত্রীর পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি। 

লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের প্রধান অধ্যক্ষ ড.মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম নারী মৈত্রীর এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, তামাক একটি মারাত্মক ক্ষতিকর দ্রব্য। এ দ্রব্য অবিলম্বে বর্জন করা উচিত। এ জন্য আমাদেরকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। হতে হবে যথেষ্ট সচেতন। তবে তার আগে প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা। পাশাপাশি তামাক মুক্ত সুস্থ জীবন যাপনের দাবিতে নারী মৈত্রীর সকল কাজে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের সম্পাদক,গার্লস গাইড কমিটির আহ্বায়ক,সহ আহ্বায়ক এবং সদস্য সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ। উক্ত আয়োজনে নারী মৈত্রীর সঙ্গে সার্বিক সহায়তায় ছিল লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ। এবং লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ এর গার্লস গাইড পক্ষ থেকে দলনেতা আশরাফিয়া জান্নাত বলেন আমরা সর্বদা তামাকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবো। নিজেরা তামাক মুক্ত থাকবো। এবং আশেপাশের সবাইকে তামাক মুক্ত রাখার চেষ্টা করবো।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা