× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মুজিববর্ষের লাল-সবুজ ঘরে বদলে যাচ্ছে আশ্রয়হীনদের জীবন

নোয়াখালী সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:১৩ এএম

আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:৫৬ এএম

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু ভিলেজ’ আশ্রয়ণ প্রকল্প। ছবি : প্রবা

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু ভিলেজ’ আশ্রয়ণ প্রকল্প। ছবি : প্রবা

কিছুদিন আগে যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, তারা এখন রঙিন টিন আর আধাপাকা বাড়িতে বসবাস করছেন। বাড়িতেই শাকসবজি চাষ, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের লাল-সবুজ ঘরে বদলে যাচ্ছে তাদের জীবন।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের ‘বঙ্গবন্ধু ভিলেজ’ আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে বদলেছে ছিন্নমূল মানুষের যাপিত জীবন। তারা এখন বসবাস করছেন রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সে বাড়িতেই করছেন শাকসবজির আবাদ। কেউ করছেন হাঁস-মুরগি, ছাগল-গরু পালন। সন্তানদের পাঠাচ্ছেন স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছেন সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকিতে উন্নয়নের নানা দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।

সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের কেগনা নামক স্থানে প্রায় ১০ একর জমিতে ২৭০ আশ্রয়হীন পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ভিলেজ’। যার পুরো জায়গাটি ছিল সরকারি খাসজমি। স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহিমের সহযোগিতায় যা উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন।

এক বছরের বেশি সময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করছেন স্বপ্না আক্তার। নিজের ঘরের চারপাশে রোপণ করেছেন শাকসবজি।

স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি এক বছর হয়েছে। ঘরের পাশেই সবজি উৎপাদন করছি। পেঁপে, লাউ, শিম, বেগুন গাছ রোপণ করেছি। পাশাপাশি পেয়ারা গাছও লাগিয়েছি। আমার অনেক উন্নতি হয়েছে। এখান থেকে নিয়েই রান্না করি। আমার কোনো কিছু বাজার থেকে কিনতে হয় না।’

মোহাম্মদ সোহেল নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আগে ভূমিহীন ছিলাম। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে চলতাম। ঘরের জন্য আবেদন করলে একটি ঘর পাই। এখানে হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু-ছাগল লালনপালন করছি। এতে আমার আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।’

স্বামী গৃহহীন হওয়ায় বাবা-মা হারা রোকেয়া বেগমের ঠাঁই হয়েছিল নানাবাড়িতে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করে ভাগ্য বদলে গেছে তারও।

তিনি বলেন, ‘বাবা-মা নাই। কেউ দেখার ছিল না। নানাবাড়িতে অন্যের জায়গায় থাকতাম। এখন নিজের ঘরেই আছি। স্বামী ভাড়ায় অটোরিকশা চালায়। আমি টুকটাক কাজ করি এতেই আমাদের সংসার চলে।’

গৃহহীন আমেনা বেগম থাকতেন চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অন্যের জায়গায়। সেখানে স্বামী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে পাহাড়ের ওপর থাকতাম। অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর ঘরে অনেক ভালো আছি। শাকসবজি চাষাবাদ করে নিজের চাহিদা পূরণ করছি। আমার আর কিছু বলার নাই। খুব শান্তিতে আছি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’

আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রশাসন। ছবি : প্রবা

সাবেক শিক্ষক আমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নানান রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসাসেবা নিতে নিতে নিজের সব সম্বল বিক্রি করে গৃহহীন হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার অসুস্থতার কারণে জায়গাজমি বিক্রি করতে করতে ভূমিহীন হয়ে গেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আশ্রয়ণের ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছে। এখন আমি ভালো আছি।’

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘তিন-চার স্তরে যাচাই-বাছাই করে গৃহহীনদের মুজিববর্ষের ঘর দেওয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। এখন তাদের পরিচয় মিলেছে। পাশাপাশি তাদের ভাগ্য বদলেছে। প্রতিনিয়ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তার পরও যা যা প্রয়োজন তা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন রায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কেউ ভূমিহীন থাকবে না। আমরা সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহিমের সহযোগিতায় ১০ একর খাসজমি উদ্ধার করে এসব ঘর নির্মাণ করেছি। ইতোমধ্যে দুইশর অধিক ঘর মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তার তদারকি করছে।’

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবনমান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছি। নোয়াখালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পসংলগ্ন বেশ কয়েকটি স্থানে শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ এবং ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহিম বলেন, ‘জায়গাটি বেদখল ছিল। আমি নিজে জায়গাটি উদ্ধার করেছি। এখানে পরিবারগুলোর জন্য অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি সবসময় এই পরিবারগুলোর পাশে আছি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা