পাবনা সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৫২ পিএম
বুধবার হাসপাতালে নিহত ও আহতদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রবা
পাবনার ঈশ্বরদীতে গুলিতে রিকশাচালক মামুন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের ছেলে হৃদয় হোসেন ও তার ভাই পৌর কাউন্সিলর কামালকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। তারা বলছেন, বুধবার (৪ জানুয়ারি) গভীর রাতে শহরের শৈলপাড়ার বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কিছু লোক তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা স্বপ্না বলেন, ‘মধ্যরাতে পুলিশের পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল সদস্য বাড়িতে এসে আমার স্বামী পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে আটক করে নিয়ে যায়।’
তবে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। পুলিশের অন্যান্য ইউনিটও ঘটনা তদন্ত করছে। কাউন্সিলরকে পুলিশের অন্য কোনো ইউনিট আটক করতে পারে। তবে কে আটক করেছে সেটি আমি জানি না।’
ওসি বলেন, ‘মামুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
এদিকে মামুন হোসেনের নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি)
রাতে মামুনের মা লিপি বেগম এই মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে পৌরসভার এক নম্বর
ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে। মামলায় কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার
হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা
হলেন হত্যায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন, তার ভাই যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন,
আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেন ও মো. ইব্রাহিম।
ঘটনার বিষয়ে এর আগে
স্থানীয়দের বরাতে ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, বুধবার রাতে ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে আসা দ্রুতগামী
ভটভটি ও লেগুনা গাড়ি থামিয়ে তাদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলে নিষেধ করেন স্থানীয় দোকানদাররা।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার হোসেন তার দলবল নিয়ে দোকানদারদের ওপর চড়াও হন। তাদের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে আনোয়ার উদ্দিন
তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে রিকশাচালক মামুন হোসেন ও রকি হোসেনকে গুলি করেন। সে
সময় তার সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাতে আহত করে পালিয়ে যান।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার
করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুন হোসেনকে মৃত ঘোষণা
করেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা
হয়।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী বিচিত্রা পারভিন বলেন, ‘আমার স্বামী আনোয়ার যুবলীগের রাজনীতি করলেও তিনি
রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে গুলি করার কথা বলা হচ্ছে।’
ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের
সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘আনোয়ার উদ্দিনের যুবলীগের কোনো কমিটিতে পদ-পদবি নেই।’