ঋণ এনে না দেওয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে ‘খুন’

চট্টগ্রামের হালিশহরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ, সমিতি থেকে ঋণ এনে দিতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে হত্যা করেছেন তার স্বামী। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অভিযুক্তের নামে হত্যা মামলা করেছেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন আসামি।

হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আল মামুন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হত্যার শিকার দুই সন্তানের জননী রাবেয়া আক্তার হাটহাজারী উপজেলার আব্দুল মালেকের মেয়ে। গতকাল সন্ধ্যার দিকে হালিশহরের শিশুপল্লী এলাকায় খুন হন তিনি। এ ঘটনায় আজ রবিবার হালিশহর থানায় রাবেয়ার স্বামী মো. জামিলের নামে মামলা করেন শ্বশুর আব্দুল মালেক।

জামিলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। চট্টগ্রামের হালিশহরে ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন তিনি।

রাবেয়ার বাবা মালেক হালিশহর কেন্দ্রীয় মসজিদের এক নম্বর গলির চার নম্বর প্লটের তদারকি করেন। সেখানেই একটা খুপড়ি ঘরে থাকেন তিনি। গলির মুখে একটি ছোট দোকানও আছে তার।

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘৯ মাস আগে জামিলের সঙ্গে আমার মেয়ে রাবেয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা আমার সঙ্গে থাকে। জামিল ভাঙ্গারির কাজ করে। গতকাল (শনিবার) দুপুরে সে রাবেয়াকে একটা সমিতি থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দিতে বলে। কিন্তু রাবেয়া রাজি হয়নি। সন্ধ্যায় সে আমার মেয়েকে ঘরের ভেতর গলা কেটে হত্যা করে। আমি দোকানে ছিলাম। একপর্যায়ে দেখি মেয়ে গলা কাটা অবস্থায় আমার দোকানের সামনে এসে রাস্তায় পড়ে যায়।’

রাবেয়ার ছোট বোন ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আপুর আগের সংসারের দুটো মেয়ে আছে। গতকাল সমিতি থেকে টাকা (ঋণ) নিয়ে দিতে রাজি না হওয়ার পর দুলাভাই খুব স্বাভাবিক ছিলেন। বিকালে একটা ব্যাগ নিয়ে বাসায় আসেন। ভেতরে কী আছে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেছিলেন নাস্তা আছে। কিছুক্ষণ পর বললেন ঘুরতে যাবেন আমরা যেন সবাই প্রস্তুত হই। সবাইকে নিয়ে বের হওয়ার পর আমাদের সামনে এগোতে বলে উনি কাজ আছে বলে আপুকে নিয়ে ঘরের ভেতর নিয়ে যান। আমরা স্বাভাবিকভাবে সামনের দিকে হাঁটতে থাকি। কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে এসে দেখি সব শেষ।’

হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আল মামুন বলেন, ‘রাবেয়া হত্যার ঘটনায় তার স্বামী জামিলকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বিকালে রাবেয়ার মরদেহ বুঝে নেয় পরিবার। মাগরিবের পর জানাজা শেষে দাফন করা হয়।