চট্টগ্রামের হালিশহরে গৃহবধু রাবেয়া আক্তার হত্যা মামলায় তার স্বামী ও ভগ্নিপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করার কথা জানিয়েছে বাহিনীটি।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে হালিশহর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, সোমবার রাতে চট্টগ্রাম ও কিশোরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন রাবেয়ার স্বামী মো. জামিল ও তার ছোট বোনের স্বামী মো. মোস্তফা। দুজনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।
পুলিশ উপকমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে প্রথমে জামিলকে সন্দেহ করেছিল পুলিশ। তদন্তে নেমে মোস্তফার সম্পৃক্ততার তথ্য পাই। বিট পুলিশের সহায়তায় অভিযানে নেমে মোস্তফাকে চট্টগ্রাম ও জামিলকে কিশোরগঞ্জের নিকলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে হত্যার কথা স্বীকার করেছে জামিল।’
পারিবারিক দ্বন্দে ভগ্নিপতির সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনও স্পষ্ট না। অধিকতর তদন্তে
বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া যাবে। তবে মোস্তফা ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে তার সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছে জামিল। তারা দুজনেই প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিলেন।’
গত শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে হালিশহরের শিশুপল্লী এলাকায় রাবেয়া হত্যার শিকার হন। ঘটনার পরদিন ১৫ জানুয়ারি নিহতের বাবা হত্যা মামলা করেন। মামলায় রাবেয়ার স্বামী জামিলকে আসামি করা হয়।
রাবেয়ার বাবা আব্দুল মালেকের অভিযোগ, নয় মাস আগে জামিলের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রাবেয়া মালেকের বাড়িতেই থাকতেন। জামিল ভাঙ্গারির কাজ করতেন। শনিবার দুপুরে জামিল রাবেয়াকে একটি সমিতি থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দিতে বলে। এতে রাজি হননি রাবেয়া। পরে সন্ধ্যায় ঘরের ভেতর তাকে গলা কেটে হত্যা করেন জামিল।
রাবেয়ার ছোট বোন ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘ঋণ নিয়ে দিতে রাজি না হওয়ার পর দুলাভাই খুব স্বাভাবিক ছিলেন। বিকালে একটা ব্যাগ নিয়ে বাসায় আসেন। ভেতরে কী আছে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেছিলেন নাস্তা আছে। কিছুক্ষণ পর বললেন ঘুরতে যাবেন, আমরা যেন সবাই প্রস্তুত হই। সবাইকে নিয়ে বের হওয়ার পর আমাদের সামনে এগোতে বলে উনি কাজ আছে বলে আপুকে নিয়ে ঘরের ভেতর নিয়ে যান। আমরা স্বাভাবিকভাবে সামনের দিকে হাঁটতে থাকি। কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে এসে দেখি সব শেষ।’