রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:০৬ পিএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৫০ পিএম
খোকন বসাকের পুড়ে যাওয়া বাড়ি। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বসতঘরে আগুন লেগে দুই সন্তান, মা-বাবা ও স্ত্রী হারানো খোকন বসাক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্বজনদের হারিয়ে নির্বাক তিনি। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন। বিপর্যস্ত খোকন আর বাড়ি ফিরতে চান না বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু তুষার বসাক। তবে কোথায় থাকতে চান তা বলেননি।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে উত্তর রাঙ্গুনিয়া থানার উত্তর পারুয়া ইউনিয়নের মহাজন পাড়ায় আবদুল মালেকের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন—খোকনের বাবা কাঙাল বসাক, মা ললিতা বসাক, স্ত্রী লাকী বসাক, ছেলে সৌরভ বসাক ও মেয়ে স্বরস্বতী বসাক।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশপথে খোকনের বড় বোন অঞ্জনা দে শুয়ে আছেন। ঘরে শুনশান নীরবতা। পোড়া গন্ধ বের হচ্ছিল তখনও। ঘরের পুড়ে যাওয়া সামগ্রী ও একমাত্র সিএনজি অটোরিকশাটিও আগের জায়গায় পড়ে আছে। কিছুক্ষণ পর ছুটে আসেন তার প্রতিবেশী ও বন্ধু তুষার বসাক।
তিনি জানান, খোকনের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাকে নতুন ব্যান্ডেজ পড়ানো হয়েছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় গতকাল তাকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তার বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে ১৫ দিন পর আবার দেখা করতে বলেছেন।
তিনি জানান, খোকন আর বাড়িতে আসবে না বলে জানিয়েছে। তবে কোথায় থাকতে চায় সে বিষয়েও কিছু বলছে না। আগামী ৩১ তারিখ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এখানে আসবেন বলে জানিয়েছেন। এরপর কী করা যায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
খোকনের বড় বোন অঞ্জনা দে বলেন, পোড়া ঘরটি চৌকি দিয়ে আমি বসে আছি। সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে আমার ছোট বোন রেণী দে গতকাল শ্বশুর বাড়ি চলে গেছে। খোকন না আসা পর্যন্ত আমি এখানে থাকব। কিন্তু আমার ভাই যদি এসে এই ঘর দেখে তাহলে সে স্টোক করবে। সে আসার আগে সবার সহযোগিতায় অন্তত তার জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দিতে চাই। হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।
এর আগে খোকন বসাক সাংবাদিকদের জানিয়েছিল, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তার বক্তব্যের সূত্র ধরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মন্দিরের দিকে তার রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়।