পাবনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৫৮ পিএম
প্রতীকী ছবি
পাবনার বেড়া উপজেলায় কলেজে যাওয়ার সময় বখাটের মারধরের শিকার হয় সুস্মিতা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী। বাড়ি ফেরার পর ঘরে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে সেই ঘর থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
সুস্মিতা খাতুন বেড়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীতে পড়ত। পৌর এলাকার সান্ড্যালপাড়া মহল্লার চা-দোকানি জাহিদুল ইসলামের মেয়ে সে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুস্মিতা কলেজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়।
কলেজের কাছাকাছি পৌঁছালে হঠাৎ আশিক নামের এক তরুণ তার পথরোধ করে এবং জোর করে রিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। দুপুরের দিকে সুস্মিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় কলেজের সামনে দেখা যায়।
এ সময় কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আশিক নামের ওই তরুণকে সুস্মিতার গতিবধি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। পরে সহপাঠীরা রিকশায় করে সুস্মিতাকে বাড়ি দিয়ে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুস্মিতার একাধিক সহপাঠী জানায়, সুস্মিতা সব সময়ই আশিকের ভয়ে থাকত। বিশেষ করে কলেজে যাওয়ার সময় বেশি ভয় পেত। রিকশায় তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সুস্মিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশায় বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় সুস্মিতা সহপাঠীদের জানিয়েছিল, কলেজ মাঠে আশিক তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। তর্কের একপর্যায়ে সে সুস্মিতাকে শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে।
মঙ্গলবার বিকালে পরিবারের সদস্যরা ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের মিন্টু মিয়ার ছেলে আশিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সুস্মিতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি আশিক তার বাবাকে দিয়ে সুস্মিতার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সুস্মিতার বাবা ওই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। বিষয়টি আশিক ভালোভাবে নেয়নি। সে প্রতিশোধ হিসেবে সুস্মিতাকে টার্গেট করে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আহত সুস্মিতা বাসায় এসে তার মাকে ঘটনা জানালে তার মা উল্টো তাকে বকাঝকা করেন। এ সময় সে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে সুস্মিতাকে উদ্ধার করে বেড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে পুলিশ তার লাশ বেড়া থানায় নিয়ে যায়।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ইতোমধ্যে আশিককে ধরার জন্য অভিযান শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সুস্মিতার লাশ পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।