রাজশাহী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:১১ পিএম
দখল হওয়া জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছিল ভবন। সেটি গুঁড়িয়ে দিয়ে বৃদ্ধ ভোলা মার্ডির কাছে জমি বুঝিয়ে দেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রবা ফটো
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বার এক কৃষকের জমি ভূমিদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার করে পরিবারকে বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ওই জমিতে নির্মাণাধীন ভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে কৃষক ভোলা মার্ডিকে তার জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের বামলাহাল মৌজার ৯০১ দাগের ৩৪ শতক খাস জমি সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বার স্থানীয় ভোলা মার্ডিকে ১৯৮৯-৯০ সালে বন্দোবস্ত প্রথায় চাষাবাদের জন্য দেয় স্থানীয় ভূমি অফিস। তবে তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে সেটি দখলে রেখে চাষাবাদ করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী শাজাহান।
দুই-তিন সপ্তাহ আগে হঠাৎ সেখানে ভবন নির্মাণ শুরু করেন শাহাজান। শেষ সম্বল জায়গাটি উদ্ধারের জন্য দিশেহারা হয়ে ভোলা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলুর কাছে যান। তিনিও কোনো সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেন ভোলা মার্ডি। পরে গত বৃহস্পতিবার ভোলা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসানকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। পরে বুলডোজার দিয়ে নির্মাণাধীন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে ভোলা মার্ডির পরিবারের কাছে জমিটি বুঝিয়ে দেন। বন্দোবস্তের জমিটি ফিরে পেয়ে বৃদ্ধ ভোলা মার্ডি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ভোলা মার্ডির জমিটিতে স্থাপনা নির্মাণ করতে শুরু করায় বৃহস্পতিবার তোপের মুখে পড়েন দখলদার শাহাজান। গতকাল যখন প্রশাসন অভিযান চালায় তখন তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি পলাতক বলে জানান স্থানীয়।
অভিযুক্ত শাহাজানের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, জমিটি ডাবলু নামের একজনের। তার কাছ থেকে তিনি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। এমনকি জমিটি নিয়ে মামলা চলছে বলে জানান তিনি। তবে কার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, এমন প্রশ্নে শাহাজান বলেন, ‘সেটি আমি এখন বলতে পারব না। আমরা আদালতে যাব বিষয়টি নিয়ে লড়তে।’ বর্গা নেওয়া জমিতে ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘ভোলা মার্ডির অভিযোগের পর সেখানে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয় বিষয়টি তদন্তের জন্য। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। পরে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে সেই জমিটি অভিযোগকারীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’