গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:২৮ পিএম
গাজীপুরে দুদকের গণশুনানি। প্রবা ফটো
গাজীপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে বিস্তর অভিযোগ। এর মধ্যে জেলার ২৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৬৫টি অভিযোগ তুলেছেন সেবাগ্রহীতারা। কিছু অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়েছে দুদক। তাছাড়া ধাপে ধাপে অভিযোগ সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে দুদকের এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে বিভিন্ন সরকারি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষসহ নানা অভিযোগ তোলেন সেবাগ্রহীতারা। জেলার ২৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে ১৬৫টি। এর মধ্যে কিছু অভিযোগ ছিল সুনির্দিষ্ট, কিছু অভিযোগ ছিল ঢালাও।
১৬৫টি অভিযোগের মধ্যে ৮৬টির শুনানি হয়। ৪টি অভিযোগ পরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। একটি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি অভিযোগগুলো তাৎক্ষণিক সমাধান করে দুদক। পাশাপাশি অভিযোগ সমাধানে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন দুদক কর্মকর্তারা।
অভিযোগ উঠা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাসপোর্ট অফিস, পল্লীবিদুৎ অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, ভূমি অফিস, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, বিআরটি অফিস, কৃষি ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, বন বিভাগ, শিক্ষা অফিস, গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, তিতাশ গ্যাস, সমাজসেবা অধিদপ্তর, প্রবাসী কল্যাণ অধিদপ্তর, জীবন বিমা করপোরেশন, কারা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভুমি অফিস। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে ভুমি অফিসের বিরুদ্ধে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর বিধান অনুযায়ী আজ গণশুনানি হয়েছে। কিছু অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়েছে। কিছু অভিযোগ সমাধানের জন্য দুই-একদিন সময় চাওয়া হয়েছে। যেগুলো কিছুটা জটিল, সেসব সমাধানের জন্য এক মাস সময় নেওয়া হয়েছে। আজ এখানে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর শতভাগ সমাধান হবে।’
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ উঠা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার সেবাপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গণশুনানিতে উপস্থাপন ও সমাধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে দুদকের গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, দুদক ঢাকা বিভাগের পরিচালক মোরশেদ আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান, গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শরিফুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এম.এ.বারী এবং সাধারণ সম্পাদক মুকুল কুমার মল্লিক এবং গাজীপুর জেলার অধিকাংশ সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা।