× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একাধিক পিআইসিতে বাড়ছে ব্যয়

সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:৪৭ পিএম

আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৪৭ পিএম

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে পাঁচনাইলা বাঁধ নির্মাণে তোড়জোড়। প্রবা ফটো

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে পাঁচনাইলা বাঁধ নির্মাণে তোড়জোড়। প্রবা ফটো

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে পাঁচনাইলা বাঁধ। পাহাড়ি ঢল কিংবা অকাল বন্যায় গেল বছরে বাঁধটি ভাঙেনি। হাওরের কৃষকদের ধান গোলায় তোলার পর অযত্নে ভেঙে যায় বাঁধটি। পরে গত বছরের জুনে ভয়াবহ বন্যায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সেই বাঁধ নির্মাণে এবার তিনটি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। এতে বাঁধের প্রশস্ত যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়েছে বরাদ্দও। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। 

হাওরের ফসল রক্ষায় সরকার প্রতিবছর অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে আসছে। এক সময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাঁধের কাজ করানো হতো। কিন্তু ২০১৭ সালে বন্যায় শতভাগ ফসলহানির পর নতুন নীতিমালা গঠন করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। 

বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করে কাজ করার এই পদ্ধতিটি গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করা হয়েছিল। এতে প্রথম দুই–এক বছর ভালোই কাজ হয়েছে। এরপরই নানান অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট শুরু হয়েছে। অভিযোগ আছে, কমিটিতে নামে-বেনামে স্থানীয় রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ঢুকে পড়েছেন। তারা পিআইসি নিজেদের কবজায় নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরকারি টাকা লুটপাট করছেন। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ আছে।

কৃষি অফিসের হিসাব মতে, এবার তাহিরপুর উপজেলায় ১৭ হাজার ৩৯৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলায় কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা করতে প্রতিবছরই সরকার পিআইসি গঠন করে বাঁধ নির্মাণ করে। তবে বছরে বছরে নির্মিত বাঁধ অক্ষত থাকায় পিআইসির পরিমাণ ও বরাদ্দ কমার কথা থাকলেও উল্টো বাড়ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এই উপজেলায় ৬৮টি পিআইসি গঠন করা হয়িছিল। এবার করা হয়েছে ১১২ টি। গত অর্থবছরে সরকারের বরাদ্দ ছিলো ১৫ কোটি, এবার বেড়ে হয়েছে ২০ কোটি। তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে পাঁচনাইলা বাঁধে ৬০, ৬১ ও ৬২ নম্বরে তিনটি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। মোট ব্যয় ধারা হয়েছে ৫৭ লাখ টাকার বেশি।

গত শনিবার বাঁধের পাশেই কথা হয় স্থানীয় দু’জন কৃষকের সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জনিয়েছেন, জন্মের পরে এতো বড় বাঁধ তারা দেখেন নি। এবার অনেক বড় বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সরকারের দ্বিগুণ টাকা খরচ হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছরই সরকারের টাকা লুটপাট করার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীসহ প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জড়িত। হাওরের ফসল রক্ষার বাঁধ নির্মাণ এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। 

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, তাহিরপুরের বাঁধ নির্মাণে একটি পিআইসি গঠন করলেই হয়ে যায়, সেখানে তিনটি গঠন করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের তথা জনগণের অর্থের অপচয় হচ্ছে। 

হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘সরকারি টাকা লুট-পাটের জন্য বছরে বছরে পিআইসির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় প্রভাশালী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। বাঁধ নির্মাণকে তারা সফল ব্যবসা মনে করেন। একটি পিআইসি থেকে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ পান তারা।’

২২ লাখ টাকার একটি পিআইসি পাশ করাতে একজনকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে বলেও জানান তিনি। এজন্য প্রতিবছর পিআইসি ও বরাদ্দ কমার কথা থাকলেও উল্টো বাড়ছে বলে মনে করেন চিত্তরঞ্জন তালুকদার।

জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমিনুল হক ভূইয়া বলেন, বন্যার পরে আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি, পানি আসলে বাঁধে চাপ বেশি পড়ে। এই চাপ কমাবার জন্য বাঁধ বড় করতে হচ্ছে। নয়তো বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এজন্য এবার পিআইসি বাড়ানো হয়েছে। এবার কোনো ঝুঁকি থাকবে না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা