চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩১ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:৩৩ পিএম
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার উড়িরচরের এ এইচ নবদিগন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ দিবস পালন। প্রবা ফটো
কলাগাছ দিয়ে বানানো শহীদ মিনার বর্ণমালা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মিনারের খুঁটিতে ঝুলছে ফুলের মালা। সামনে হলুদ কাপড় বিছিয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে জানানো হয়েছে শ্রদ্ধা। বেদিতে হাতে লেখা হয়েছে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের এমন চিত্র দেখা গেছে, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার উড়িরচরের এ এইচ নবদিগন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। সে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বিচ্ছিন্ন একটি ইউনিয়ন উড়িরচর। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধায় বঞ্চিত থাকলেও দেশ প্রেমে পিছিয়ে নেই এই দ্বীপের মানুষরা। অমর একুশে ফেব্রুয়ারি পালনে শহীদদের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিদ্যালয়টির ১৫১ জন শিক্ষার্থী।
এই ইউনিয়ন এতোটাই বিচ্ছিন্ন যে, সেখানে ফুলের বাণিজ্যিক ব্যবহার পর্যন্ত নেই। স্থানীয়দের বাড়ি বাড়ি ঘুরে শিক্ষার্থীরা জোগাড় করেছে ফুল। পুরো আয়োজনে বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষকদের সঙ্গে ১০ শিক্ষার্থী সহযোগিতা করেন । সকালে প্রভাতফেরি শেষে বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে অংকের দৌড়, মোরগের লড়াই, চকলেট দৌড়সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘প্রতিবারই বিভিন্নভাবে জাতীয় দিবস পালন করা হয়। তবে এবার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে পালন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফুল কুঁড়িয়ে এনেছে, তৈরি করেছে মিনার। তাদের এ আয়োজনে আমরা অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি জানান, শহীদ মিনার বানানোর দায়িত্বে স্কুলের চার সহকারি শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, শিপন সূত্রধর, শুভ দাশ ও বিমল চন্দ্র বনিকসহ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশী দাশ বলেন, ‘এভাবে কখনো একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করিনি। নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।'
শুভ দাশ বলেন, ‘এই ইউনিয়ন বিচ্ছন্ন হওয়ায় পুরো ইউনিয়নে একটি শহীদ মিনার আছে। সেটাও বেশ দূরে। সেকারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতীকী শহীদ মিনার তৈরি করি। সেই ভাবনা থেকেই আয়োজনটা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কলা গাছ থেকে শুরু করে সবকিকছু সংগ্রহ করেছে। আয়োজনকে ঘিরে পুরো স্কুল তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশাত্ববোধ জাগিয়ে তোলা এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য ছিল। শিক্ষার্থীদের প্রাণবস্ত অংশগ্রহন আর উচ্ছ্বাস আমরা মুগ্ধ হয়েছি।’