কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:০০ পিএম
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:৪২ এএম
মারা যাওয়া সিংহী টুম্পা। ছবি : সংগৃহীত
সিংহ ‘রাসেল’ ও সিংহী ‘টুম্পা’। তারা পরস্পর ভাই-বোন। উভয়ের জন্ম কক্সবাজারের চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। ২০০৭ সালে রাসেল ও ২০০৮ সালে টুম্পা জন্মগ্রহণ করে। ভালোই কাটছিল তাদের দিনকাল। হঠাৎ নাওয়াখাওয়া ছেড়ে দেয় তারা। ওজন কমতে থাকে ভাই-বোনের। দ্বারস্থ হতে হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের। শনাক্ত হয় ভাই-বোনই অ্যানাপ্লাজমা ও বিউবমিয়া স্পিসিসে আক্রান্ত।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় টুম্পা মারা যায়। ২১ দিন আগে মারা যায় তার ভাই রাসেল। এ নিয়ে গত এক বছরে সাতটি প্রাণী মারা গেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে।
টুম্পার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দুই মাস আগে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন চিকিৎসা করলেও দুই সিংহের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে মেডিকেল বোর্ড। এ বোর্ডের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিবেকচন্দ্র সূত্রধর। তাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলাকালে ৩১ জানুয়ারি রাতে মারা যায় সিংহ রাসেল। অন্য আক্রান্ত টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘টুম্পার মৃত্যুর পর মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও পার্কের ভেটেরিনারি সার্জনের নেতৃত্বে করা হয়েছে ময়নাতদন্ত। পরে বেলা ২টার দিকে মরদেহ পার্কের মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।’
বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি বার্ধক্যের কারণে সিংহী টুম্পা মারা গেছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
সাফারি পার্কে গত এক বছরে চারটি সিংহ, দুটি হাতি, একটি জেব্রা—এ সাতটি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে বিপুলসংখ্যক হরিণ। এ ব্যাপারে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সাফারি পার্কে ৩ শতাধিক হরিণ রয়েছে। উন্মুক্ত এসব হরিণ পার্কের সীমানাপ্রাচীরের অরক্ষিত ২১টি স্থান দিয়ে নিকটের পাহাড়ে বের হলে শিকারির খপ্পরে পড়ে আর ফিরতে পারে না। তাই কিছুসংখ্যক হরিণ নিখোঁজ।’