× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিকলবন্দি আব্দুল্লাহর শৈশব, কথা বলতে চান বিচারক

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৩ ১৭:৩৯ পিএম

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩ ১৯:১৩ পিএম

শিকলবন্দি শিশু মো. আব্দুল্লাহ। প্রবা ফটো

শিকলবন্দি শিশু মো. আব্দুল্লাহ। প্রবা ফটো

বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে মাঠ-ঘাট দাপিয়ে বেড়ানোর বয়সে ১০ বছরের মো. আব্দুল্লাহ শিকলবন্দি। এইভাবে শৈশবের তিনটি বছর কেটে গেছে তার। কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের ঝরঝরি গ্রামের ফরিদ আহমদ ও নুর বানুর সন্তান মো. আবদুল্লাহ। দুরন্তপনার জন্য গত তিন বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি। এই শিকলবন্দি অবস্থায় চলছে তার খাওয়া, গোসল, ঘুমসহ সব কাজ।

লোহার শিকলে বন্দির খবরটি গণমাধ্যমে আসার পর কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকীর নজরে আসে। তারপর এ শিশুর সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বিচারক মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকী বলেন, ‘তিন বছর ধরে শিকলবন্দি শিশু আবদুল্লাহ বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ১০ বছরের শিশু আবদুল্লাহকে দুরন্তপনার কারণে তিন বছর শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে, যা অমানবিক ও বেআইনি মর্মে অত্র আদালতের নিকট প্রতিয়মান হয়েছে।’

এ পরিস্থিতিতে শিশু আবদুল্লাহর সাথে কথা বলতে চান বিচারক। এ জন্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে জেলা আদালতে হাজির করতে কক্সবাজার জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ প্রদান করে এক নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

আদালতের আদেশের কপিটি বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে হাতে পেয়েছেন সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও থানার ওসি। 

কক্সবাজার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাসান মাসুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসার সাথে সাথে মাঠ কর্মীদের তার বাসায় পাঠাই। তার জন্য কিছু কাপড়ও দেওয়া হয়। বুধবার সকালে তার পায়ে ও কোমরে মোড়ানো শিকল খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে শিশু বুধবার রাত পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটি ঘরে ফিরেছে বলে জানা গেছে। আদালতের নোটিশ বুধবার দুপুরে হাতে পেয়েছি। শিশুটিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে।’

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের একটি নোটিশ হাতে পেয়েছি। সমাজ সেবা কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। শিশুটিকে আদালতে আনার প্রক্রিয়া চলছে।’

শিশুটির মা নুর বানু বলেন, ‘আমার সম্পদ বলতে তেমন কিছুই নেই। মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে জীবিকা নির্বাহ করি। আবদুল্লাহর বড় চার ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছে। আবদুল্লাহ সবার ছোট। তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছিলাম। অভাবের কারণেই তাকে পড়াতে পারিনি। তার নামে মানুষ বিচার দেয়। মানুষের কথায় থেকে বাঁচতে এই পথ বেচে নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের জীবনটা আমার সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা আছে শুনেছি, কিন্তু কেউ কোনো সহযোগিতা বা পরামর্শ দেয়নি। আমি অশিক্ষিত মানুষ। কার কাছে গেলে কী হবে তাও জানি না। মাঝেমধ্যে ছেলের দিকে চেয়ে জড়িয়ে ধরি। তখন অনেক খারাপ লাগে।’

আবদুল্লাহর পিতা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সে সারাদিন ঘরের বাইরে থাকে। প্রতিদিন তার নামে বিচার আসে। মানুষের কাছে মানসম্মান বলতে আর কিছু নেই। তাই অতিষ্ঠ হয়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। মানুষের কথা থেকে রেহাই পেয়েছি।’

আদালতে আদেশের পর বৃহস্পতিবার সকালে যোগাযোগ করা হলে বাবা ফরিদ আহমদ বলেন, ‘শিকল খুলে দেওয়ার পর ছেলেকে একরাত পাওয়া যায়নি। পরের দিন বাড়ি এসেছে আব্দুল্লাহ। এখন আমাদের সাথে রয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা