বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৬:১৭ পিএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৮:০৩ পিএম
বন্যপ্রাণীর মৃত্যুরোধে এক বছরের গতি কমেনি লাউয়াছড়া সড়কে। প্রবা ফটো
গত বছর বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুরোধে ২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচলের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে এ উদ্যোগের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ সড়কে চলাচলকারী গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। বরং চলতি বছর নতুন করে বনের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া আখাউড়া রেল পথের ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেললাইনে চলাচলকারী ট্রেনের গতি ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে লাউয়াছড়ার সড়কটিতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধে একটি বিকল্প সড়ক নির্মাণ এবং বিকল্প সড়ক না হওয়া পর্যন্ত যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি ছিল বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও পরিবেশকর্মীদের। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
উদ্যান এলাকার সড়কের সাড়ে সাত কিলোমিটারে সকল প্রকার যানবাহন ২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ গত বছরের ৩ মার্চ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস থেকে এই গতি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। কিন্তু গত এক বছর ধরে ঠিক আগের মতই যানবাহন দ্রুত গতিতে চলাচল করছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, লাউয়াছড়ার ভেতর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সিলেটে ১০ থেকে ১২টি ট্রেন চলাচল করে। গত পাঁচ বছরে ৩৬টি প্রাণী এই উদ্যানের রেলপথে দুর্ঘটনায় মারা গেছে এবং অসংখ্য প্রাণী আহত হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে আহত হওয়া একটি মায়া হরিণ ট্রেন থামিয়ে জবাই করে হত্যা করে রেলকর্মীরা। গত বছর বন বিভাগ বলেছিল ২০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কের উভয়পাশে চেকপোস্ট বসাবে। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও কোন উদ্যোগ নেই।
কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, লাউয়াছড়ায় সড়কে বন্যপ্রাণীর মৃত্যু রক্ষায় এক বছর আগে যানবাহনের গতি ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কেউই তা মানেনি। এ সড়কে এখনও দ্রুতগতিতে যান চলাচল করে। এরইমধ্যে চলতি বছর রেললাইনেও ট্রেন চলাচলে ২০ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ হল। তবে শুনেছি রেলবিভাগ বলছে বনের ভেতরে গতি কম থাকলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হবে। এসব না করে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথে আন্ডারপাস কিংবা অভারপাস সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলে ভালো হত।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র সাংবাদিকদের বলেন, সড়ক ও রেলপথে বন্যপ্রাণী মৃত্যু ঠেকাতেই আমাদের এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্ত যানবাহনের চালকেরা তা না মেনেই দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করছেন।