× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ

রমজানের আগে বাড়ি আসার কথা ছিল সালাউদ্দিনের

লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৭:০১ পিএম

আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৭:২৫ পিএম

সালাউদ্দিনের লাশের অপেক্ষায় দাদি হাজেরা খাতুন। প্রবা ফটো

সালাউদ্দিনের লাশের অপেক্ষায় দাদি হাজেরা খাতুন। প্রবা ফটো

সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে নিহত সালাউদ্দিন। প্রবা ফটো

সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে নিহত সালাউদ্দিন। প্রবা ফটো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে নিহত হন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার পাঠানো টাকাতেই চলত বাবা মহিজল হকসহ সৎ মা, দুই ভাই ও তিন বোনের সংসার। রমজানের আগে বাড়িতে আসার কথা ছিল সালাউদ্দিনের। এর আগেই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার লাশ দেখার জন্য উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরলরেন্স গ্রামের বাড়িতে অপেক্ষা করছেন আত্মীয়-স্বজনরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সালাউদ্দিনের লাশ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন স্বজনরা। 

রবিবার (৫ মার্চ) সকালে সালাউদ্দিনের বাড়িতে গেলে স্বজনরা এসব কথা বলেন। তিনি দুর্ঘটনাকবলিত অক্সিজেন প্ল্যান্টের গাড়িচালক ছিলেন। 

পরিবার ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, মহিজল হক লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করেন। সালাউদ্দিনের পাঠানো টাকা ও মানুষের কাছে হাত পেতে দুঃখ-দুর্দশায় সংসার চলত তার। অভাব-অনটনের সংসারে বড় ছেলেই ছিল একমাত্র ভরসা। শনিবার রাতে চট্টগ্রাম হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বাড়িতে ফোন দিয়ে সালাউদ্দিনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। সালাউদ্দিনের মৃত্যুতে তার দাদি হাজেরা খাতুনসহ স্বজনরা ভেঙে পড়েছেন।

এদিকে খবর পেয়ে ভোরে মহিজল তার অন্য দুই ছেলে সবুজ হোসেন ও রাকিব হোসেনকে নিয়ে সীতাকুণ্ডে ছুটে গেছেন। সেখানে ছেলের লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। 

সালাউদ্দিনের দাদি হাজেরা খাতুন ও ফুফু স্বপ্না বেগম বলেন, ’সালাউদ্দিনসহ তিন সন্তানকে রেখে ১০-১২ বছর আগে তাদের মা জোসনা বেগম মারা যান। এরপর তার বাবা রহিমা বেগমকে বিয়ে করেন। বাড়িতে সবাই মিলেমিশেই ছিলেন। তারা উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের সাহেবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১০ বছর আগে নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পার্শ্ববর্তী চরলরেন্স ইউনিয়নের চরলরেন্স গ্রামে বাড়িঘর নির্মাণ করেন। ৬-৭ বছর আগে কাজের সন্ধানে সালাউদ্দিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড যান। প্রথম পাথর ভাঙার দায়িত্বে ছিলেন। প্রায় সাত মাস আগে অক্সিজেন প্ল্যান্টে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন।’ 

সালাউদ্দিন প্রায় ২-৩ মাস আগে বাড়িতে আসেন। তখন তিনি বলেছিলেন, রমজানের আগেই বাড়িতে আসবেন। কিন্তু তার আর জীবিত আসা হলো না। শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণে নিহত হন।

সালাউদ্দিনের দাদি হাজেরা খাতুন বলেন, ‘কোলে-পিঠে করে তাকে মানুষ করেছিলাম। আমার সালাউদ্দিন আর নেই। আর দাদি বলে ডাকবে না। কখনও তার পথ চেয়ে থাকতে হবে না। আমার ছেলে গেছে তার লাশ আনার জন্য। কখন আনবে, কখন দেখব শেষবারের মতো সালাউদ্দিনকে?’ 

চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একেএম নুরুল আমিন বলেন, পরিবারটি খুব দরিদ্র। সালাউদ্দিনই একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। সংশ্লিষ্টদের তার পরিবারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, খবর পেয়ে সালাউদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ আনতে তার বাবা ও দুই ভাই সীতাকুণ্ড গেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা