দুই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালককে মারধর করে পুলিশে দেন স্বজনরা। প্রবা ফটো
চাঁদপুর শহরের আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়কের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক মোরশেদ আলমকে নবজাতকদের স্বজনরা মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে।
বুধবার (৮ মার্চ) রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে দুই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এতে খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নবজাতকদের স্বজনদের অভিযোগ, বুধবার রাত ৮টার দিকে সিজারের পর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার বাকালী পট্টির ভ্যানচালক শাহজাহান মিয়ার দুই দিন বয়সী নবজাতক চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা যায়। অন্যদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরমাল ডেলিভারির সময় স্থানীয় বকাউল বাড়ী রোডের সন্তু বেপারীর নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ভ্যানচালক শাহজাহান বলেন, ‘সোমবার আমার স্ত্রীর (সুফিয়া বেগম) সিজারের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে সুস্থই ছিল। দুপুরে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। তারা চিকিৎসক দেখিয়ে বলছে পেটে গ্যাস জমেছে। ওষধ দেয়ার পরও সুস্থ হয়নি। পরে রাতে মারা যায়।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘শুধুমাত্র আমার শিশুরই মৃত্যু হয়নি। আমার স্ত্রীর অবস্থাও খারাপ। তার ব্যথার যন্ত্রণায় চিৎকার দিলেও নার্সদেরকে পাওয়া যায়নি। তাদের ফার্মেসি বন্ধ থাকে, কোনো ওষধ পাওয়া যায় না।’
শাহজাহানের স্বজন জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘সুফিয়ার প্রথম সন্তানের পর দুটি সন্তান জন্মের পর মারা যায়। এটি চতুর্থ সন্তান। অসহায় ও গরীব হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সিজার করে। কিন্তু তাদের অবহেলার কারণে বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। তারা হাসপাতাল না, কসাইখানা খুলে বসেছে। কোনো চিকিৎসক নাই, নার্স নাই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
অপর নবজাতকের বাবা সন্তু বেপারী বলেন, ‘দুপুরে (বুধবার) আমার স্ত্রী হীরা আক্তারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি তাদেরকে বলেছি নরমাল ডেলিভারিতে সমস্যা হলে সিজার করেন। তাদের হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক নাই, তারা কোনো চিকিৎসক ডেকেও আনে না। হাসপাতালে থাকা আমার স্বজনরা বলেছে পেটের মধ্যে চেপে ধরে আবার সন্তানকে তারা হত্যা করেছে।’
হীরা আক্তারের বোন জামাতা সফিকুর রহমান বলেন, ‘বিয়ের ১১ বছর পর এই প্রথম সন্তান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সঠিক সেবা দিতে না পারায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। মা হীরা এখনো জানেন না তার সন্তান মৃত। তাকে জানানো হয়নি।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ওটি ইনচার্জ মোরশেদ আলম স্বীকার করেন তিনি ও নার্স আকলিমা গৃহবধূ হীরা আক্তারের নরমাল ডেলিভারি করেছেন। তবে কীভাবে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা বলেন, ‘পরিচালক মোরশেদের বিরুদ্ধে দুই পরিবারের অভিযোগ। তাই তাকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।’
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, ‘অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.