পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩ ২০:১০ পিএম
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৩ ২০:৫৯ পিএম
শুক্রবার পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন ছিল। প্রবা ফটো
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ। জেলার সার্বিক পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হলেও শুক্রবার (১০ মার্চ) জুমার পর সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন ছিল। নেওয়া হয় বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা।
এদিন শহরজুড়ে পুলিশের জোরদার টহল ছিল। জুমার পর মিছিল কিংবা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের প্রতিটি মসজিদ এলাকায় সাদা পোশাকে পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন অবস্থান নেন। তবে জুমায় মুসল্লির উপস্থিতি ছিল অন্য জুমার তুলনায় অনেক কম।
নামাজের পর মিছিল বা সংঘর্ষ ঠেকাতে শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের দুই পাশে পুলিশ, ডিবি পুলিশ, বিজিবি সদস্যরা অবস্থান নেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল কমে যায়। এতে সাধারণ মানুষের মনে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সুপার সিরাজুল হুদা বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় আরও মামলা হবে। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের ধরা হচ্ছে। অযথা কাউকে হয়রানি বা আসামি করা হবে না। সে বিষয়ে খেয়াল রাখছি। বর্তমানে পঞ্চগড়ের পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘জুমার খুতবায় উস্কানিমূলক বক্তব্য যেন না দেওয়া হয় সেজন্য ইমামদের বলা হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সুপারসহ জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে আমি মাঠে ছিলাম। আহমদিয়াদের এলাকায়ও বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের দুটি মসজিদসহ আহমদনগর, নতুনবন্দর, ফুলতলা, শালশিরিসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে পুলিশ ও বিজিবির টহল ও অবস্থান জোরদার ছিল। বাড়ানো হয় গোয়েন্দা তৎপরতাও। জুমার নামাজের পরে মুসল্লিরা দ্রুতই বাসায় চলে যান।
জুমার নামাজের পরে শহরের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখতে চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় আসেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাকিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হকসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শহরের রিকশাচালক আইবুল ইসলাম বলেন, ‘গত শুক্রবার (৩ মার্চ) পঞ্চগড়ে মারামারি হওয়ায় আজও (শুক্রবার) পুলিশ ছিল। মানুষজন খুবই কম বের হয়েছে। যাত্রী বেশি পাইনি। নিজেও কিছুটা ভয়ে ছিলাম। তবে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সব স্বাভাবিক ছিল।’
মুদি দোকানদার জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজ শহরে অপ্রীতিকর কোনো কিছুই হয়নি। মানুষ ভয়ে পঞ্চগড়ে আসেনি। আজ বেচাকেনা কম হয়েছে।’
এদিকে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে আরও ৩টি মামলা করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা তিনটি করা হয়। এ নিয়ে মোট মামলার সংখ্যা হলো ১৬টি। এরমধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ১৪টি ও বোদা থানায় দুটি। এসব মামলায় শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭৩ জনে। মামলাগুলোতে মোট আসামি করা হয়েছে ১১ হাজার জনকে।