× ই-পেপার প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত ফিচার শিল্প-সংস্কৃতি ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চালুর আগেই হুমকিতে সেতু

চম্পক কুমার, জয়পুরহাট

১৭ মার্চ ২০২৩ ১২:৪১ পিএম । আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১২:৪২ পিএম

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করায় চালুর আগেই হুমকিতে পড়েছে সেতুটি। প্রবা ফটো

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার ছোট যমুনা নদীর ওপর তৈরি করা হচ্ছে ব্রিজ। এতে চলাচলের সুবিধা পাবেন নদী পারাপারের মানুষরা। কিন্তু এমন সুবিধাও দাঁড়িয়ে আছে হুমকির মুখে।

ব্রিজের কাছাকাছি স্থান থেকে তোলা হচ্ছে বালু। এতে হুমকিতে পড়ছে ব্রিজটি। আর এ নিয়ে ইউএনওকে অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি প্রকৌশল বিভাগের।

জানা গেছে, বাগজানা-ধরঞ্জী ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের জন্য কুটাহারা-বাগজানা এলাকায় যমুনা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। এর প্রাক্কলিক মূল্য ৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা হলেও চুক্তি মূল্য ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ধরা হয়েছে। ব্রিজটির কাজ পেয়েছে মেসার্স বিএইচবি লিটন জেভি ও মেসার্স লিটন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০২১ সালের ২২ এপ্রিল ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর। তবে সময় মতো কাজ শেষ না হওয়ায় আরও দুবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এরপরও ৩০ শতাংশ কাজ বাকি রয়ে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদীর ওপর ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ব্রিজের নিচ দিয়ে ও ধার ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে বিকল্প রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে মেসি ট্রাক্টর। এসব ট্রাক্টর বালুমহাল থেকে বালু নিয়ে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করলে নেওয়া হচ্ছে টোলের টাকা।

ব্রিজ নির্মাণের আগে নৌকায় মানুষ পারাপারের জন্য খেয়াঘাটটি লিজ নিতেন রতনপুরের আজাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। এবারও ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাগজানা ইউনিয়ন থেকে ঘাট ডেকে নিয়েছেন তিনি।

আজাদ হোসেন বলেন, ব্রিজ নির্মাণের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকল্প রাস্তা করে দেয়নি। এই রাস্তা বালুমহালের ইজারাদার করে দিয়েছে। এতে আমিও সহায়তা করেছি। ঘাট ডেকে নেওয়ার কারণে মানুষ হেঁটে, মোটরসাইকেলে বা ভ্যান নিয়ে গেলে টোল হিসেবে টাকা আদায় করা হয়।

কুটাহারা-বাগজানা এলাকায় বালুমহাল ইজারা নিয়েছেন আবু সাঈদ রনি নামের এক ব্যক্তি। তিনি পাঁচবিবি উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদে রয়েছেন।

তিনি বলেন, এই বালুমহালটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে। ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা পড়েছে। বিকল্প রাস্তাটি আমি করে দিয়েছি। এতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বালুমহাল থেকে বালু তুলতে গেলে অনেক নির্দেশনা থাকে। এসব মেনে চললে বালু পাওয়া যাবে না। নদী খননের ফলে নদীতে তেমন বালু নেই। তাই পাশের জমিগুলো থেকে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে।

শরিফুল ইসলাম নামের বালুমহালের এক শ্রমিক জানান, আমি দিনে পাঁচশ টাকা মুজুরি পাই। দিনে ৩০ থেকে ৪০ গাড়ি বালু বিক্রি হয়। প্রতি গাড়ি বালু ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা ধরা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নৌকায় চড়ে নদী পারাপার হতে হতো। ব্রিজটি হলে অনেকে সুবিধা হবে। তবে ব্রিজের পাশেই বালুর ঘাট ইজারা দেওয়া আছে। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত বালু তোলা হয়। এভাবে বালু তুলতে থাকলে ব্রিজটি ঝুঁকিতে পড়বে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. লিটন ইসলাম জানান, ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। প্রথমে বিকল্প রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেও পরে বিকল্প রাস্তা করে দেননি বলে স্বীকার করেন তিনি।

পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বিকল্প রাস্তার জন্য কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দুবারে ৯ মাস কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আরেকবার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ব্রিজ নির্মাণের কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ব্রিজের গোড়ার খুব কাছেই নদীর পাশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে জায়গাটিতে পুকুরের মতো অনেক বড় গর্ত হয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে স্রোত বৃদ্ধি পাবে। তখন বালু উত্তোলনের ওই স্থানে বড় ধরনের ঘূর্ণির সৃষ্টি হলে পানি বের হওয়ার সময় ব্রিজের পাশের রাস্তা ভেঙেও যেতে পারে। পানির ধাক্কা ব্রিজে পড়বে। এতে ব্রিজটি ঝুঁকিতে পড়বে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ইউএনও মো. বরমান হোসেন বলেন, যেখানে ইজারা দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালানো হবে।

শেয়ার করুন-

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা