জাতির পিতার জন্মদিনের ব্যানারে এমপির নাম না থাকায় সংঘর্ষ, আহত ৫

জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া ও ব্যানারে সংসদ সদস্যের নাম না থাকা কেন্দ্র করে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মমিন মণ্ডল এবং সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আশানুর বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হন।

ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানানো কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের বেলকুচি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে দলীয় ব্যানারে এমপির নাম না থাকা কেন্দ্র করে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা, আর হামলার ঘটনায় স্থানীয় এমপির ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাকর্মীরা।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলে দেওয়ার প্রস্তুতির সময় কার্যালয়ে টানানো ব্যানারে এমপির নাম না থাকা কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। উভয় গ্রুপকেই দলীয় কার্যালয় থেকে সরিয়ে দিই। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল পৌনে ৭টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হই। সকাল ৭টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডল আসার পর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করি। এরপর আমরা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের আগেই দলীয় কার্যালয়ে টানানো ব্যানারে এমপির নাম না থাকা কেন্দ্র করে এমপির লোকজন আমার ওপর চড়াও হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলি এটা দলের ব্যানার এখানে শুধু বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রীর ছবি আর নাম থাকবে। নিচে আয়োজনে উপজেলা আওয়ামী লীগ লেখা রয়েছে। কিন্তু তারা সেটা মানতে নারাজ। উত্তেজিত হয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি কামাল হোসেন, অলিভ মণ্ডল, রুবেল হোসেন গুরুতর আহত হলে আমি তাড়াতাড়ি তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। তবে এই ছোট্ট বিষয় কেন্দ্র করে এমপির এমন আচরণ আমি আশা করিনি। বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানাব।’

এ বিষয়ে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, ‘সকালে এমপি মহোদয় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে দেখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে তার নাম নেই। তখন বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে আশানুর বিশ্বাসের কিছু লোক কথাটি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে উভয়ের সমর্থকদের মাঝে সামান্য হাতাহাতি হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ করে। পরে আমরা দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে কলেজ মোড়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি ও উপজেলা অডিটোরিয়ামের আলোচনা সভায় অংশ নিই।’

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেএম হোসেন আলী হাসান বলেন, ‘আজকের এই দিনে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’