সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৮:৪৬ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৯:০০ পিএম
সোনারগাঁ থানা। সংগৃহীত ফটো
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার করে নেওয়ার সময় হামলা ও গোলাগুলি ঘটনায় মামলা করেছে র্যাব। শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে র্যাবের উপসহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অন্তত ৭০ জনের নামে সোনারগাঁ থানায় এই মামলা করেন। মামলার পরই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি।
ঘটনাস্থল থেকে আটক ৬ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। গুলিতে নিহত আবুল কাসেমের ছেলে নজরুল ইসলামকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে সাদিপুর ইউনিয়নের বরগাঁও চেয়ারম্যানপাড়ায় এই হামলা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকির রাব্বানী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাকির রাব্বানী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় ওই মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক নজরুল, সেলিম, রুবেল, হযরত আলী, জাহাঙ্গীর ও আমানউল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে র্যাবের মামলার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। অধিকাংশ বাসিন্দা হতদরিদ্র। কুটির শিল্প ও জামদানি শাড়ি বুনে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। দুদিন ধরে এসব কাজ বন্ধ রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী রমিজা বেগম বলেন, ‘র্যাব পরিচয়ে সাদা পোশাকের কিছু লোক রাতে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে। পাশের বাড়ির সেলিম নামের এক প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে আমার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
রমিজা বেগম আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার বড় ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। ওর বাবাকে দাফন করারও অনুমতি পায়নি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে এখন আমি কী করব। আমি জানি আমার স্বামী হত্যার বিচার পাব না। তাই কারও কাছে বিচার চাই না।’
স্থানীয় তাসলিমা ও বিলকিস বেগমসহ এলাকাবাসীরা জানান, শনিবার রাত ৩টার দিকে দ্বিতীয় দফা র্যাব সদস্যরা এসে এলাকার প্রতিটি ঘরে তল্লাশি চালিয়ে নিহত আবুল কাসেমের ছেলে নজরুল, নাতি শ্রাবন, স্কুল, কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ ২০ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা ও ইউপি সদস্যের জিম্মায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে অন্যদের ছেড়ে দেয়।
নিহত আবুল কাসেমের আরেক ছেলে দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘শনিবার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে বাবার লাশ স্থানীয় বরগাঁও কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আমাদের পুরো পরিবার এখন অসহায় হয়ে পড়েছে।’
র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহামুদ পাশা জানান, গজারিয়াপাড়া এলাকায় রোজিনা আক্তার নামে এক নারীর গলা কাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন আসামি সেলিমকে বরগাঁও গ্রাম থেকে আটক করে নিয়ে আসার সময় গ্রামবাসীরা আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। র্যাব সদস্যরা বাধা দেওয়ায় স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে র্যাবের ওপর হামলা চালায়।