বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩২ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২০:২৪ পিএম
আবারও অনশনে বসা রুমেলের অনশন ভাঙিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। প্রবা ফটো
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের জনবল প্রত্যাহারসহ ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে হাতে-গলায় শিকল বেঁধে ও কাফনের কাপড় পরে আবারও প্রতিবাদী অনশনে বসা হুমায়ুন আহম্মেদ রুমেলের অনশন ভাঙিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ।
রবিবার (১৯ মার্চ) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সার্কিট হাউস থেকে বের হওয়ার সময় পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান তিনি। এর আগে সকাল ৯টার দিকে অনশন শুরু করেছিলেন রুমেল।
রুমেল বলেন, ’প্রতিমন্ত্রী স্নেহভরে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, আমার সব কথা শুনেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলবেন। এজন্য আপাতত অনশন স্থগিত করছি। দাবি আদায় না হলে রোজার মাঝামাঝিতে আবারও অনশনে বসব।’
সকালে অনশন শুরুর পর তিনি বলেছিলেন, ‘জেলা ক্রীড়া সংস্থার আশ্বাসে ১৮ মার্চ পর্যন্ত অনশন স্থগিত ঘোষণা করেছিলাম। ১৮ তারিখের মধ্যে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসায় আমি আবারও অনশন শুরু করেছি।’ এর আগে ৫ মার্চ থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন রুমেল। পরে ভেন্যু পুনর্বহালের আশ্বাসে ৮ মার্চ অনশন ভাঙেন তিনি। ওইদিন দুপুরে তার মুখে পানি দিয়ে অনশন ভাঙান জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শামিম কামাল।
তখন ভেন্যু ফেরতের বিষয়ে বিসিবির সভাপতি এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের ‘ইতিবাচক’ সাড়া মিলেছে বলে দাবি করেছিলেন বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যকে জানিয়েছিলেন, ‘সবুজসংকেত’ পেয়ে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে ভেন্যু পুনর্বহালের জন্য বিসিবি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সবুজসংকেতের পরও দৃশ্যত ভেন্যু পুর্নবহালের কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি সূত্র। এখন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাস কতটা বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে। এমন প্রেক্ষাপটেই ৮ ঘন্টার অনশন ভাঙলেন রুমেল। এরপরেও ইতিবাচক ফল না এলে রোজার মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন শুরু করবেন বলে জনিয়েছেন তিনি।
মিডিয়া কভারেজ পেতে বারবার অনশনে বসছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনশন করতে সাহস লাগে। মিডিয়া কভারেজের জন্য যদি অনশন করতাম তাহলে আরও অনেকেই আমার সঙ্গে যুক্ত হতেন। কিন্তু কোনো কিছু চিন্তা না করে শুধু বগুড়াবাসীর জন্য শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ভেন্যু ফিরে পেতে অনশন করে যাচ্ছি।'
এর আগে ২ মার্চ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চিঠি পাঠিয়ে চান্দু স্টেডিয়াম ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এতে অভিযোগ করা হয়, কয়েক বছর ধরেই বোর্ডের ম্যাচ আয়োজনে অসহযোগিতা করছে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা। চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি বগুড়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিবির ১৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ক্লোজড করে মিরপুরে রিপোর্ট করতে বলা হয়। একই সঙ্গে কার্গোতে করে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে গ্রাউন্ড রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে ইনডোরের নেট, ম্যাট সবকিছু।
বিসিবির এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, বিসিবির সূচি অনুযায়ী ৮ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে শেখ কামাল জাতীয় যুব ক্রিকেট লিগের খেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা বিসিবিকে চিঠি দিয়ে জানায়, ১ মার্চ থেকে স্থানীয় প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরু হবে। তাই যুব ক্রিকেটের জন্য মাঠ দেওয়া সম্ভব নয়। মূলত এরপরই বিসিবি থেকে ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত আসে।
ভেন্যু ও জনবল প্রত্যাহারের পর থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন প্রতিবাদ জানায়। জেলা বিএনপিসহ নানা সংগঠন মানববন্ধন করে।