শিবচরে বাস দুর্ঘটনা
মাদারীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২০:২৪ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২২:০২ পিএম
গোপালগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক অনাদি চন্দ্র মজুমদার।
বাবার চেহারার দিকে তাকালে দম বন্ধ হয়ে যায় ছেলের। কান্না আর আহাজারিতে থমথমে হাসপাতাল। মাদারীপুরের এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত গোপালগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক অনাদি চন্দ্র মজুমদারের ছেলে অর্ণব মজুমদার বাবার এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। আর্তনাদ করে থমকে গেছেন নিহত অনাদি মজুমদারের স্ত্রী অনিতা দত্ত।
অনাদি মজুমদার একটি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গোপালগঞ্জ থেকে ইমাদ পরিবহনের জি২ আসনের যাত্রী হয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে কয়েকটি পল্টি খেয়ে খাদে পড়ে বাসটি। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ জন। ঘটনাস্থলেই মারা যান অনাদি মজুমদার।
অনাদি মজুমদারের স্ত্রী অনিতা দত্ত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষক।
দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ছেলে অর্ণব মজুমদার। এ সময় সঙ্গে ছিলেন মা অনিতা দত্ত। বাবার এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না অর্ণব।
তিনি বলেন, ‘বাবার চেহারা দেখার পর দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেছে। দম বন্ধ হয়ে আসতেছে আমার। ঈশ্বর আমাকে এমন দিন দেখাল কেন? আমি যে বাবাহারা হয়ে গেলাম।’
স্বামীর লাশ শনাক্ত করার পরে ভেঙে পড়েন অনিতা দত্তও। তিনি বলেন, ‘ভোর ৬টায় ফোনে আমার সঙ্গে কথা হলো। বলল ঢাকায় ট্রেনিং শেষ করে আজই ফিরে আসবে। এমন হবে জানলে ঢাকায় যেতেই দিতাম না। আমার সুখের সংসারে আর সুখ রইল না।’
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, রবিবার সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি।
এখন পর্যন্ত নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে ১০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়ে কমপক্ষে ২৫ জন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বেলা সাড়ে ৩টার মধ্যে ১৬ জনের লাশই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৯ জন গোপালগঞ্জের। চারজনের বাড়ি খুলনায়। বাগেরহাটসহ আরও কয়েক জেলার বাসিন্দা ছিলেন বাসে।