লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৫ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৫:৩৩ পিএম
আসামিকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তিন আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুলের জন্য সাত বছর বয়সি পপি সাহাকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় একজনের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডিতের নাম রুনা আক্তার আঁখি। তিনি উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেরোয়া গ্রামের মো. এমরানের স্ত্রী। নিহত পপি সাহা সাগরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। সে বামনী ইউনিয়নের সাগরদি গ্রামের প্রবাসী নির্মল সাহার মেয়ে।
লক্ষ্মীপুর জজ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি জসিম উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রুনার স্বামী এমরানও এ মামলার আসামি ছিলেন। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত না থাকায় আদালত তাকে খালাস দেন। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এজাহারের বরাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাইভেট পড়ে এসে বাড়ির পাশেই পপি খেলছিল। তখন রুনা তাকে ডেকে ঘরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তার কানের দুলগুলো খুলে নেয় রুনা। এতে পপি কান্না করে উঠে। কান্নার শব্দ যেন কেউ শুনতে না পায় এজন্য পপিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে রুনা। পরে তার মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। বাড়ি ফিরলে রুনা তার স্বামীকে বিষয়টি জানায়। এতে পপির মরদেহ গুম করার পরিকল্পনা করে তারা। এদিকে ভাত খাওয়ানোর জন্য পপিকে তার মা ববিতা রানী সাহা ডাকলেও কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও তাকে না পেয়ে দুপুরে রুনা ও এমরানের ঘর বন্ধ দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে ঘরের দরজা ভেঙে লোকজন ঘরে ঢুকে পপির মরদেহ দেখতে পায়। এ সময় রুনা ও তার স্বামী পালাতে গেলে তাদেরকে আটক করে।
ওইদিন রাতে ববিতা রায়পুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরদিন রুনা ও এমরানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
একই বছর ১১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে রায়পুর উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।