বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ২১:৩৫ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ২২:৩০ পিএম
নদীর একাংশে মাটি ভরাট করে রাস্তা তৈরি করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা। প্রবা ফটো
বগুড়ার সদর উপজেলার নওদাপাড়া এলাকায় করতোয়া নদীতে সীমানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) রাস্তা নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হোসনে-আরা বেগম। মুচলেকা দেওয়ার পরও ফের মাটি ফেলে নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করায় সোমবার (২০ মার্চ) সংস্থাটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা পরিশোধ না করায় টিএমএসএসের মালিকানাধীন মম ইন ইকোপার্কের ব্যবস্থাপক জাকিরুল ইসলাম জাকিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জাহাঙ্গীর। তিনি জানান, নওদাপাড়া এলাকায় করতোয়া নদীর একাংশে মাটি ভরাট করে নদীর ওপর রাস্তা তৈরি করার অভিযোগে টিএমএসএসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও ফিরোজা পারভীন। জরিমানা পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ৩ মাসের কারাদণ্ড হবে বলেও জানান ইউএনও। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হিসেবে তখন সংস্থার সহকারী পরিচালক নজিবর রহমানকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
সন্ধ্যায় মম ইন ইকোপার্কের ব্যবস্থাপক জাকিরুল ইসলাম জাকিকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা পরিষদে যান হোসনে-আরা বেগম। তখন বলা হয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নজিবর নন, জাকিরুল। সেখানে ইউএনওকে হোসনে-আরা জানান, তিনি জরিমানা দিতে পারবেন না। এরপর ইউএনও জাকিরুলকে কারাগারে পাঠান।
রাত সাড়ে ৯টায় বগুড়া কারাগারের জেল সুপার আনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, তারা জাকিরুল ইসলাম জাকি নামে টিএমএসএসের এক কর্মকর্তাকে বুঝে পেয়েছেন। তার তিন মাসের কারাদণ্ড হয়েছে।
অভিযানের সময় ইউএনও ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আজ দুপুরে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি অফিস এবং টিএমএসএসের সার্ভেয়াররা যৌথ নদী জরিপ চালিয়েছেন। এর আগে গত শনিবার নদী ভরাটের অভিযোগ পেয়ে টিএমএসএসের ইকোপার্কে অভিযান চালানো হয়। আমি এসে দেখেছি, করতোয়া নদীর মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। সেদিন টিএমএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে-আরা বেগম দাবি করেছিলেন, সেটা তাদের জায়গা। ওইদিন তিনি মুচলেকা দিয়ে যান, এখানে সীমানা নির্ধারণের আগে আর কাজ করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও সেটি অমান্য করে তা চলমান রাখে টিএমএসএস। আজও এখানে করতোয়া নদীর মূল প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে আইন অনুযায়ী এই রায় দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণের জলাধার-সংক্রান্ত একটি আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী কেউ জলাধার বা নদীর প্রবাহ বন্ধ করতে পারবে না। সেজন্য এই রায় দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে হোসনে-আরা বেগম বলেন, ‘নদীর ওপর যে রাস্তা করা হয়েছে তা সাময়িক, যা এই অঞ্চলের মানুষ যাতায়াতের জন্য নির্মাণ করেছে। এর সঙ্গে টিএমএসএসের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ফলে এ রায় টিএমএসএসের জন্য হতে পারে না। এজন্য ইউএনও মহোদয়কে রায় স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।’