বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩ ২২:৪৮ পিএম
তরমুজ খেতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো
বরগুনায় গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ, ঝড়ো হাওয়া আর শিলা বৃষ্টিতে তরমুজ খেতে পানি জমে গেছে। এতে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আতংক আর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
তারা বলছেন, দ্রুত খেতের পানি না সরলে চাষিদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
কৃষি বিভাগ বলছে, এখন পর্যন্ত যে পরিমান বৃষ্টি হয়েছে তাতে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে বৃষ্টি যদি আরও হয় তাহলে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে মাইকিং করে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন এবং পচনরোধের ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
এ বছর বরগুনা কৃষি বিভাগ ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরলেও চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমিতে। তরমুজ চাষের সঙ্গে জেলার প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবার সম্পৃক্ত।
কৃষকরা জানায়, তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষকরা খুব আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় ক্ষতির মুখে রয়েছেন তারা।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন তরমুজ খেত ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ খেতে অতিরিক্ত পানি জমেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দ্রুত পানি সরছে না।
বরগুনা সদর উপজেলা বালিয়াতলী ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া এলাকার কৃষক মো. মাসুদ বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ এনে তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এখন ক্ষতির মুখে পড়েছি। আরও বৃষ্টি হলে ঋণগ্রস্থ হয়ে এলাকা ছাড়তে হবে।
আমতলীর চুনাখালী গ্রামের কৃষক আনসার মাদবর বলেন, আমি ১৭ কানি জমিতে তরমুজ দিয়েছি। বৃষ্টির পানিতে খেত তলিয়ে গেছে, তাই বেশ দুশ্চিন্তায় আছি।
একই উপজেলার সোনাখালী গ্রামের কৃষক বারেক গাজী বলেন, খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশন করেও শেষ করতে পারছি না। বৃষ্টি আরও হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে। চাষিদের পথে বসতে হবে।
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, এ বছর বরগুনা জেলায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এবং চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৩২৬ হেক্টর বেশি। গত কয়েকদিন ধরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে তেমন একটা ক্ষতি না হলেও সামনে আরও বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে কৃষকরা।
তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে মাইকিং করে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন এবং পচনরোধের ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।