উদ্ধার করা চোরাই ২৪টি মোটরসাইকেল। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ থেকে ২৪টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের রেকর্ডে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারে এযাবতকালের সবচেয়ে বড় অভিযান এটি।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলেন, মিঠন ধর, বাবর ওরফে বাবুল, মো. শাহেদ, মো. রিপন এবং খোরশেদ আলম। তাদের বয়স ২৪ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে।
এদের মধ্যে মিঠন ধর ও খোরশেদ আলম লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদের স্থায়ী বাসিন্দা। বাকি তিনজন সন্দ্বীপের বাসিন্দা।
রবিবার (২৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলামের মোটরসাইকেল চুরি হয়। ওই চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আন্তঃজেলা চোর চক্রের সন্ধান পাই আমরা।’
এরপরই শনিবার দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্দ্বীপ থেকে ম. শামসুল ইসলামের মোটরসাইকেলসহ ২৪টি চোরাই বাইক উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত পলাতকরা হলেন, দিদার হোসেন ও নজরুল ইসলাম।
চক্রটি কুমিল্লা থেকে কক্সবাজার এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে সন্দ্বীপে বিক্রি করে আসছিল বলে জানান উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে তারা এই কাজ করছেন। চার ধাপে চক্রটির সদস্যরা কাজ করে। এর মধ্যে প্রথম দলের সদস্যরা চুরি করে দ্বিতীয় দলের লোকদের দেয়। তারা সেটি তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। তারা সেটা সন্দ্বীপে পৌঁছে দেয়। সন্দ্বীপে সেসব মোটরসাইকেল সাধারণ মানুষের মাঝে বিক্রি করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে আরও অন্তত ৫০টি মোটরসাইকেল তারা এভাবে বিক্রি করেছে বলে জানিয়েছে। আমাদের ধারণা সংখ্যাটি আরও অনেক বেশি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় এই উপজেলা চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রির স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে সক্রিয় আছে। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করব।’
তবে গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে অভিযানে থাকা একজন উপপরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রতিটি গাড়ি সন্দ্বীপ পৌঁছানোর জন্য দালালের মাধ্যমে চুক্তি হয়। ১০ হাজার টাকা করে দালালদের দেওয়া হয়। এই টাকা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হয়।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান শুভ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ২৪টি মোটরসাইকেল উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাট দিয়ে সন্দ্বীপ পৌঁছানো হয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকলে এমনটা হতো না। তাদেরও অসচেতনতা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) অতনু চক্রবর্তী ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির।
ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘গ্রেপ্তার পাঁচজনসহ সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.