বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩ ২১:৩১ পিএম
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩ ২১:৪৫ পিএম
কুমিল্লায় সিএনজি অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ ও হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। প্রবা ফটো
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ ও পিটিয়ে হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
রবিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। পরে নিমসার-কংশনগর বাজার সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধরা। এতে প্রায় তিন ঘণ্টা চলাচল বিঘ্নিত হয়।
নিমসার সিএনজি ড্রাইভার একতা সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘চাঁদাবাজির কারণে প্রতিনিয়ত নানা অঘটন ঘটছে। প্রথমে বড় ভাইকে মারধর করা হয়। পরে ছোট ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করে চাঁদাবাজরা। এই অপরাধে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে গত শনিবার উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর মালিবাড়ি এলাকায়। নিহত আবুল কাশেম মোকাম ইউনিয়নের ভারিকোঠা গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবুল কাশেমের লাশ নিয়ে প্রথমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। পরে নিমসার-কংশনগর বাজার সড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হয় মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন, বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার, বুড়িচং থানার
ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন, ওসি তদন্ত কবির হোসেন, দেবপুর পুলিশ
ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাবেদুল ইসলামসহ আরও অনেকে ঘটনাস্থলে যান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে প্রায় তিন ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা। পরে পারিবারিক কবরস্থানে কাশেমের লাশ দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন, মোকাম ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব আলীসহ আর অনেকে।
নিহতের বড় ভাই সিএনজি অটোরিকশাচালক আবুল কালাম বলেন, শনিবার সকালে নিমসার বাজারে অটোরিকশা নিয়ে যাই। এ সময় নিমসার বাজারে তার কাছ থেকে প্রতিদিনের মতো চাঁদা দাবি করে সায়দুল, মিজান ও বাকিরসহ ৬-৭ জন। কিন্তু টাকা না থাকায় চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করন তিনি। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ছোট ভাই আবুল কাশেম তাকে দেখতে হাসপাতালে আসে। বিকালে বাড়ি ফেরার পথে শিকারপুর মালিবাড়ি এলাকায় শাহিদুল, মিজান, বাকির, জাকিরসহ ৬-৭ জন তাকে পিটিয়ে আহত করে। আহত অবস্থায় কাশেমকে কাবিলা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর নিহত কাশেমের স্ত্রী রেহেনা আক্তার বাদী হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বুড়িচং থানায় মামলা করেছেন। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন বলেন, ‘সড়কে অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এনে গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়। হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।’