× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভুট্টার কাণ্ড ও মোচা পচনে দিশেহারা কৃষকরা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩৯ পিএম

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:২২ পিএম

ফুলবাড়ী শিবনগর ইউনিয়নে ভুট্টার কাণ্ড ও মোচার গোড়ায় পচন রোগে দিশেহারা কৃষকরা। প্রবা ফটো

ফুলবাড়ী শিবনগর ইউনিয়নে ভুট্টার কাণ্ড ও মোচার গোড়ায় পচন রোগে দিশেহারা কৃষকরা। প্রবা ফটো

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভুট্টার কাণ্ড ও মোচার গোড়ায় পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা। উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে এ রোগের দেখা মিলেছে। তবে এ রোগের জন্য কৃষকরা দায়ী করছে দুর্জয়-৫৫৭৭ বীজকে আর কৃষি বিভাগ দায়ী করছে মাটিকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর, মালিপাড়া, দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও নূরপুর গ্রামের বেশিরভাগ ভুট্টা গাছে এ রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছগুলো গোড়া থেকে শুখিয়ে যাচ্ছে। গাছে ভুট্টা আসলেও তা পরিপক্ক হওয়ার আগেই শুকিয়ে গেছে। ফলে দানা ছোট ও অপরিপক্ক হয়ে যাচ্ছে। এসব দেখে হতাশায় ভুগছেন ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। তবে উপজেলার বাকি ইউনিয়নে এই রোগের দেখা মিলেনি। যার ফলে অন্য ইউনিয়নের ভুট্টা চাষিরা বাম্পার ফলনের আশা করেছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ঋণ করে ভুট্টা চাষ করেছিলেন, কিন্তু এ রোগে আক্রান্তের ফলে সব স্বপ্নগুলো ধুলিসাৎ হয়ে গেল। এখন ঋণের টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন এ নিয়ে তারা খুব চিন্তিত। 

দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছি। কিছু টাকার ঘাটতি পড়লে লাভের ওপর টাকা নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছি। ভেবেছিলাম ভুট্টা তুলে ঋণের টাকা পরিশোধ করব। এখন দেখি অর্ধেক জমির ভুট্টা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ। বাকিটুকু ওষুধ স্প্রে দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। এখন আমি মাঠে মারা গেলাম।’

দাদপুর গ্রামের মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। গাছগুলো ভালোই হয়েছিল। কিন্তু মোচায় দানা আসার পর হঠাৎ সব গাছে দানা শুকিয়ে গেছে। চেষ্টা করা হচ্ছে গাছগুলো রক্ষা করার, না হলে ক্ষতি থেকে রক্ষা নেই।’

শুধু শরিফুল ও মমিনুল নয়। ওই এলাকার আরও অনেক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষিদের দাবি যারা দুর্জয়-৫৫৭৭ জাতের ভুট্টা বীজের চাষ করেছেন তারাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে দেরিতে রোগ ধরা পড়ায় ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হয়েছে।

নূরপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি মাহবুব আলম বলেন, 'আমি ৪৫ শতক জমিতে দুর্জয়-৫৫৭৭ জাতের ভুট্টা চাষ করি। চাষ করতে গিয়ে আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভালোভাবেই গাছগুলো বড় হয়েছে, মোচাও এসেছে। কিন্তু দানা আসার সময় গাছগুলো শুকিয়ে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম ভুট্টা পরিপক্ক হয়েছে, তাই শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুই তিনদিনে মধ্যে পুরো জমির সব গাছ শুকিয়ে গেছে। পরে বুঝলাম এটি রোগ। ভুট্টা হয়েছে ঠিকই কিন্তু দানা ছোট হয়েছে। এখন ভুট্টার ফলন হলেও ভুট্টার ওজন কম হবে। ফলে যেখানে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ভুট্টা বিক্রির আশা ছিল সেখানে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকাও পাবো কিনা সন্দেহ আছে।'

তবে পৌর এলাকার চকচকা গ্রামের ভুট্টা চাষি মমতাজ উদ্দিন ও মাহবুব আলম জানান, তহারাও দুর্জয়-৫৫৭৭ জাতের ভুট্টা বীজ লাগিয়েছিলেন। কারও জমিতে এ ধরনের সমস্য দেখা দেয়নি। যাদের জমিতে সমস্যা হচ্ছে, সে জমির পুষ্টি কম। সেগুলোতে বেশি করে জৈব সার দিতে হবে। তবেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর উপজেলার ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে। ভুট্টা উৎপাদন হয় ৩৯ হাজার ১৮০ টন। যা গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রতি ১২ টন। চলতি বছরে ৩ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়। এবছর ৪৫ হাজার ৫৭৬ টন ভুট্টা উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ‘যে জমিগুলোতে সমস্যা, সে জমিগুলো আমরা দেখেছি। লাল মাটিতে যাদের জমি সেখানেই এই সমস্যাটি বেশি দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার মাটিতে ব্যাপক পরিমাণে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে। কৃষকরা জমিগুলোতে টিএসপি আর ডেফথ করে। এগুলো গাছে বেশি দিলে গাছ পুষ্টি নিতে পারেনা। ফলে পুষ্টির ঘাটটিতে পড়েছে গাছগুলো।’

তিনি বলেন, ‘ভুট্টার এক জাত কয়েক বছর থেকে চাষ করছে চাষিরা। ফলে জমি তার পুষ্টি হারাচ্ছে। পুষ্টির অভাবে কাণ্ডে পঁচা রোগটি দেখা দিচ্ছে। এখন ভুট্টা মোচা অবস্থায় আছে, স্প্রে করাও বৃথা। সমস্যাটি অনেকদিন থেকে বড় আকার ধারণ করেছে। প্রথমেই স্প্রে করলে রোগটি বৃদ্ধি পেত না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা