ফেনী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৫ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৬ পিএম
হামলায় আহত দুজন। সংগৃহীত ফটো
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় রগ কেটে দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরীর নামে পাল্টা মামলায় হয়েছে। এতে তাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই হামলায় আহত যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরডুব্বা গ্রামের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন সোমবার (২৭ মার্চ) বিকালে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি করেন।
অপর আসামিরা হলেন, ছাত্রলীগ নেতা মো. সাইমুন, মো. তামিন, মো. সাগর, মো. ইমন, মো. সাহেদ, তাওহীদ, মো. সিয়াম, আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন ওরফে বারিস্টার, ও এমরান।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, কামাল উদ্দিনের স্কুলপড়ুয়া ছেলে আইন উদ্দিনের সঙ্গে সাখাওয়াত হোসেনের পূর্ববিরোধ ছিল। এর জেরে ২৫ মার্চ রাত ৮টার দিকে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় আইন উদ্দিনের ওপর আসামিরা হামলা করে। এতে তার সঙ্গে থাকা স্বজন ফয়েজ উল্যাহও আহত হন।
ছাত্রলীগ নেতার রগ কেটে দিলেন যুবলীগ কর্মীরা
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির। তিনি বলেন, ‘হৃদয় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়। হামলাকারীরা চরডুব্বা ও চরএলাহি থেকে দলবদ্ধ হয়ে মধ্যম আহম্মদপুরের বাঁশতলায় গিয়ে হামলা করেছে। কিন্তু পাল্টা মামলায় আহতদেরকে আসামি করা ঠিক হয়নি।’
সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল হিরণ বলেন, ‘দুই পক্ষই আমাদের দলের লোকজন। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন ভূঞা সাইমুন জানান, দলের নেতার ওপর হামলা ও পাল্টা মামলার ঘটনার প্রতিবাদের কর্মসূচির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৫ রাতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে চরডুব্বা গ্রামের বাসিন্দা ও যুবলীগ কর্মী আরিফ হোসেন এবং সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি দল ইফরান হোসেন নামে এক দোকান কর্মচারীর ওপর হামলার উদ্দেশে তেড়ে যায়। এ সময় যুবলীগ নেতা মোশারফ হামলাকারীদের থামানোর চেষ্টা করেন। তখন যুবলীগ কর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় মোশারফের সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়ের পায়ের রগ কেটে দেয় তারা। হৃদয়ের চিৎকারে তার ছোট ভাই নয়ন এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। বর্তমানে হদয় ও তার ভাই নয়নকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মোশারফ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় পরদিন ২৬ মার্চ মোশারফ হোসেনের ভাই সাহাব উদ্দিন ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৮-১০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, আরিফ হোসেন, তার ভাই সাইফুল ইসলাম, নেজাম উদ্দিন মাস্টার, মো. নাঈম, মো. রিফাত, মো. অন্তর, মো. আরাফাত, মো. মেজবাহ, মো. রাহাত, মো. আরমান, আমজাদ হোসেন, মো. হায়দার, মো. মিরাজ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৮-১০ জন।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান জানান, এ মামলায় উদ্দিন মাস্টার ও মো. নাঈমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফেনীর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেল) তাসলিম হুসাইন বলেন, ‘দুই পক্ষই মামলা করেছে। হামলার ঘটনায় পকৃত আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। তদন্তে নির্দোশ প্রমাণ হলে আহত ছাত্রলীগ নেতাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’