ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক
সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৪৪ এএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১১:২০ এএম
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশে সংস্কারকাজ চলছে। ঈদের সপ্তাহখানেক আগে শেষ না হলে ঘরমুখী মানুষ পড়বে তীব্র যানজটে। কোনাবাড়ী এলাকার চিত্র। প্রবা ফটো
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশে এখনও সংস্কার ও উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। এ কাজ ঈদের সপ্তাহখানেক আগে শেষ করতে না পারলে ঘরমুখী মানুষের যানজটে পড়ার আশঙ্কা করছেন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও স্থানীয়রা।
ঈদ এলেই এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে কয়েক গুণ। তাই এবারও চলাচলের সময় ঝুঁকিপূর্ণ কিছু স্থান শনাক্ত করেছে জেলা পুলিশ।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটারজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ২০টি স্থান সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যানজটের বেশি আশঙ্কা রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়তে পারেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ।
তবে উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পার থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী ২০ রোজার মধ্যে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সংস্কার করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
এ মহাসড়ক দিয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর হয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিক সময়ে দিনে ২০-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই থেকে তিনগুণ। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ আর রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজে ধীরগতি থাকায় সৃষ্টি হয় যানজট। আর এতে যাত্রীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ ও ভোগান্তি।
মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা বলছেন, ঈদের আগেই সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা দরকার। তবে চালকদেরও সচেতন হওয়া উচিত।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশে সংস্কারকাজ চলছে। প্রবা ফটো
সরেজমিন দেখা যায়, ওই ৫০ কিলোমিটারজুড়ে বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ রয়েছে। বেশকিছু জায়গায় রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ। এ ছাড়া নির্মাণাধীন ফোর লেনের অনেক স্থান এক লেনে গিয়ে মিলিত হওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে বাঁক, যেখানে গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
দেখা যায়, মহাসড়কে কোনাবাড়ী, ঝাঈল, গোলচত্বরের ফুড ভিলেজ, নলকা, পাঁচলিয়া, মুলিবাড়ি, সয়দাবাদ, চান্দাইকোনা ব্রিজ, জমজম হোটেল, হাটিকুমরুল, ভুঁইয়াগাতী, সাহেবগঞ্জ সড়ক রয়েছে বেশ ঝুঁকিতে। নবনির্মিত নলকা সেতুর ঢাকামুখী লেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ মহাসড়কে চলাচলরত জয়পুরহাট থেকে ঢাকাগামী ট্রাকচালক ওসমান জামান বলেন, বেশকিছু জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। গাড়ি নিয়ে চলার সময় আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। ঈদের সময় প্রশাসনকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বগুড়া থেকে আসা বাসচালক হুমায়ন ইসলাম জানান, এক সড়ক থেকে অন্য সড়কে যাওয়ার সময় গাড়ির বাঁক নিতে হচ্ছে, যে কারণে গতি কমে আসছে। এক মিনিটের ধীরগতি হলেই পেছনে ৪০-৫০টি গাড়ি আটকা পড়ে।
ঈদকে ঘিরে যানজট মোকাবিলায় জেলা পুলিশ ও সওজের সঙ্গে ইতোমধ্যে মতবিনিময় করেছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। বেশকিছু স্থান নির্ধারণ করে তারা তা সংস্কারের কাজ করছেন। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোর সংস্কারকাজ চলমান রয়েছে।
হেগো-মির আকতার জেভির প্রকল্প ম্যানেজার এখলাস উদ্দিন বলেন, সংস্কারকাজ চলছে। ২০ রোজার মধ্যে কাজ শেষ হবে। এতে যানজট থাকবে না। এ ছাড়াও যানজট রোধে এ সড়কের ৫টি ব্রিজ ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হবে।
এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ঈদযাত্রায় যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর জন্য সওজের সাসেক-২ প্রকল্পের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সংস্কারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ১৪টি অংশের প্রায় ২০টি স্থান তাদের নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো সংস্কার হলে যানজটের আশঙ্কা কমবে।