ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গোলপাতার ঘরেই চলে ক্লাস। মোরেলগঞ্জের ১৯০ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩০৯টি। এগুলোর মধ্যে অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ের ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবনে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পাঠ নিচ্ছে।
কাগজকলমে কয়েকটি ভবন পরিত্যক্ত দেখানো হলেও সেগুলো অপসারণ করা হয়নি। উদ্যোগ নেওয়া হয়নি নতুন ভবন নির্মাণেরও। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২০ বিদ্যালয়ের ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এটা কাগজকলমে। বাস্তবে অর্ধশতাধিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব ভবনের বেশিরভাগেরই দরজা-জানালা নেই। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। দেয়ালের ইট বের হয়ে খুলে খুলে পড়ছে। মরিচা পড়া রড বেরিয়ে রয়েছে। অধিকাংশ ভবনের মেঝে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এমনকি পিলারের শুধু রড আছে। এ অবস্থায় অনেকটা কঙ্কালসার অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে কিছু ভবন।
উপজেলার হরতকিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৩। এ বিদ্যালয়ের ভবনটি ২০১৮ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর দুবার মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। অস্থায়ীভাবে নির্মিত টিনের ছাপরাঘরে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
পরিত্যক্ত ভবনে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। এমনকি ভবনটি অপসারণেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। পরিত্যক্ত ঘোষণা করা অন্যান্য বিদ্যালয়ের ভবনেরও একই আবস্থা বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। তারা দ্রুত এসব ভবন অপসারণ করে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জনিয়েছেন।
পশ্চিম তেলিগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মরিফম আক্তার, আরেফিন আরাফাত, হাবিবা আক্তার, সুমি রানী শীলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে বাবা-মা দুশ্চিন্তায় থাকেন। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া খুপরিঘরে প্রচণ্ড গরমে ক্লাস করতে সমস্যা হয়। আমরা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আসাদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস। অভিভাবকরা ভয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয় জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০টি পরিত্যক্ত ভবনের তালিকা রয়েছে। ইতঃপূর্বে ৫৩টি বিদ্যালয়ে মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলমান।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত স্কুল ভবনগুলোর তালিকা করে শিক্ষা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। অপসারণের জন্য নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিবছরই ব্যবহারের অনুপযোগী ভবনগুলোর নতুন করে তালিকা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম তারেক সুলতান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ২০টি ভবন অপসারণে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ভবনগুলোর তালিকা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.