পিরোজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:২৯ পিএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৫৬ পিএম
পিরোজপুরের হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। প্রবা ফটো
পেট্রোল সন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধীরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতা বিরোধীরা বিদেশ থেকে ফর্মুলা এনে যাকে খুশি তাকে দিয়ে কথা বলায়। এক কর্মকর্তা বাংলাদেশের একটি গ্রেপ্তার নিয়ে তারা আইনি পর্যন্ত লড়ছে। যখন বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়, কোথায় ছিল এই মানবাধিকারের দালালেরা।’
পিরোজপুরের হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শনিবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আইনের আওতায় চলছে। বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি নাই। যখন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করা হবে না, আইন করা হয়েছিল। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা। কেন তারা সেদিন রাস্তায় নেমে বলে নাই, যে বঙ্গবন্ধু পরিবারের মাসুম বাচ্চা, গর্ভবতী নারীসহ সপরিবারে হত্যা করার পরেও বিচার করা যাবে না। এ আইন তারা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে নিন্দা সেদিন কেন জানান নাই। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সরকারি পৃষ্টপোষকতায় শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করা হয়। ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। কোথায় ছিলেন সেই মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা? আমরা সবাইকে চিনি।’
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতাবান করতে শক্তি বাড়িয়েছিলেন। তাদের কোনো পরামর্শ শেখ হাসিনার দরকার নাই। শেখ হাসিনা জানে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কাজেই জয় বাংলা শ্লোগানে শানিত হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। রাষ্ট্রক্ষমতায় বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী শেখ হাসিনাকে আনতে যা করতে হয়, সেটাই করতে হবে। সেটাই হোক আমাদের প্রত্যয়। তিনি থাকলে আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অপ্রতিরধ্য গতিতে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ছিল দুর্বৃত্তের রাষ্ট্র, প্রকৃতিক দুর্যোগের রাষ্ট্র, সেই বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এবং রক্তের উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি থাকায় আজ বাংলাদেশ উন্নয়নে সমৃদ্ধ। আমাদের আবারও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রাষ্ট্রক্ষমতায় এনে এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি না থাকলে পদ্মা সেতু হতো না। তিনি না থাকলে বাংলাদেশের এত উন্নয়ন হতো না। কাজেই যিনি আমাদের দিয়েছেন তাকেই টিকিয়ে রাখতে হবে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য। শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই।’
জেলেদের উদ্দেশে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছিল, সেগুলো সংরক্ষণ করে ৩৫ প্রজাতির মাছ গবেষণার মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ২০০৮ সালে উৎপাদন ছিল দুই লাখ ৯৮ হাজার টন। ২০২২ সালে যা ৫ লাখ ৬৭ টনে উপণীত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের ৮০ ভাগ ইলিশই বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। আপনারা আমার দিক তাকিয়ে হলেও জাটকা নিধন বন্ধ রাখুন। এতে এই অঞ্চলের মুখ উজ্জল হবে। আমরা বিশ্বের ৫২টি দেশে মাছ রপ্তানি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মন্ত্রী কচা নদীতে এক বর্ণাঢ্য নৌ শোভাযাত্রা অংশ নেন। এতে নৌপুলিশ, কোস্টগার্ডসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের শতাধিক নৌযান অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, নৌপুলিশের ডিআইজি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন এস এম এনামুল হক, মৎস্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক খন্দকার মাহাবুবুল হক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শিকদার চান, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর হোসেন।