গাজীপুরের কালীগঞ্জের গৃহবধূ জনি আক্তার রুপা হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি জানায়, রুপাকে হত্যার পর তার লাশ বালুর বস্তায় ভরে যমুনা নদীতে ফেলে দেন তার সাবেক স্বামী মো. মোজাম্মেল হক।
প্রায় তিন মাস পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার মোজাম্মেল ও তার বড় ভাই মো. জহির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।
জানা গেছে, নিহত রুপা জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার ফাজিলপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে। তিনি দ্বিতীয় স্বামী গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের উজ্জ্বল মিয়ার সঙ্গে বসবাস করতেন। গ্রেপ্তার মোজাম্মেল ও জহির জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার হিমারদীঘি গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ২০১৫ সালে মোজাম্মেল ও রুপার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। পরে অভাব অনটনের কারণে মোজাম্মেল মালয়েশিয়া যান। ৪ বছর সেখানে থাকাকালে মোজাম্মেল তার শাশুড়ির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৯ লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন। ২০২২ সালে দেশে ফিরে এসে তার পাঠানো টাকার বিষয়ে স্ত্রী এবং তার মায়ের কাছে জানতে চাইলে তারা টাকার কোনো হিসাব দিতে পারেননি। পরে পারিবারিক মীমাংসায় মোজাম্মেলকে স্ত্রীর পরিবার ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। এ নিয়ে তাদের পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। পরে রুপা ইসলামপুর থানার চিনাডুলি গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে মো. উজ্জ্বল মিয়ার সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন। এবং তারা গাজীপুরের কালীগঞ্জে থাকতেন। রুপার দ্বিতীয় স্বামী মোজাম্মেল হকের বোনের সতিনের ছেলে।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা জানান, ওই ঘটনায় তারা সামাজিক, পারিবারিক ও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মোবাইলের মাধ্যমে রুপাকে জরুরি কথা আছে বলে ডেকে নেন মোজাম্মেল। রুপা গাজীপুর থেকে মোজাম্মেলের গ্রামের উদ্দেশে রওনা করেন। বিকাল ৪টার দিকে তিনি মাদারগঞ্জ পৌঁছর পর মোজাম্মেল তাকে বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দি যমুনা নদীর চরে তার এক বন্ধুর বাসায় বসে আলাপ আলোচনা করার জন্য রওনা করেন। আগে থেকেই তার বড় ভাই জহির একটি নৌকা নিয়ে মাদারগঞ্জ থানার জামথৈল ঘাটে ছিলেন। পরে দুইভাই তাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং মোজাম্মেল তার সঙ্গে আনা দা দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ বালুভর্তি বস্তায় ভরে যমুনায় ফেলে দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্ত্রীর কোনো খোঁজ না পেয়ে রুপার স্বামী উজ্জ্বল মিয়া বাদী হয়ে গত ২৪ জানুয়ারি গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলাটির তদন্ত করে দুই মাস ২৪ দিন পর বৃহস্পতিবার গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকা থেকে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার তারা গাজীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে বিচারক তাদের জেলা কারাগারে পাঠান।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.